বাংলাদেশ জাতীয় দলের একসময়কার নিয়মিত ফরোয়ার্ড নাবিব নেওয়াজ জীবন। বর্তমানে জাতীয় দলের বাইরে থাকলেও নিয়মিত খেলছেন ক্লাব ফুটবল। দেশের ফুটবলে যখন সকলে ভারত বধের প্রস্তুতি নিচ্ছে তখনই হঠাৎ আলোচনায় জীবন। দেশের একটি জাতীয় দৈনিকে তার মন্তব্য ছাপা হয়েছে প্রবাসী খেলোয়াড়দের জাতীয় দলে অন্তর্ভুক্তি নিয়ে। তবে সে প্রতিবেদনের প্রথম অংশের সাথে জীবনে করা মন্তব্য আসলে সামঞ্জস্যপূর্ণ মনে হয়নি। তাই মন্তব্য যাচাই করতে অফসাইড মুঠোফোনে যোগাযোগ করে জীবনের সাথে। জীবন তখন জানান, ‘আমার মন্তব্যটি ভুলভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে।’
ফুটবলে লাথি দিতে পারে না এই ধরনের কোন মন্তব্য তিনি করেননি বলেই জানান,
‘আমি কি পাগল? আমি কেন এমন অযৌক্তিক কথা বলবো? একটা দলের ফিজিও তো বলে লাথি দিতে পারে। সেখানে একজন পেশাদার ফুটবলার বলে লাথি দিতে পারবে না, আরেকজন পেশাদার ফুটবলার হয়ে এ কথা আমি কিভাবে বলি? এখানে একটু ভুল বোঝাবুঝি হয়েছে। আমি লিগে অনেকে কম খেলেও জাতীয় দলে জায়গা পেয়েছে সে কথাই বোঝাতে চেয়েছি। কিন্তু আমার মন্তব্যটি ভুলভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে।’
প্রবাসীদের অন্তর্ভুক্তি ইতিবাচক হিসেবেই দেখছেন জীবন। তবে তার আহ্বান দেশের ফুটবলের কাঠামো উন্নয়ন ও জাতীয় দল বাছাইয়ের ক্ষেত্রে পারফর্ম্যান্স বিবেচনা করা। তিনি বলেন,
‘আমি মনে করেছি বাংলাদেশের ফুটবল উন্নয়নে তৃনমূল পর্যায়ে নজর দিতে হবে। বিশ্ববিখ্যাত পেলে, ম্যারাডোনা কিংবা রোনালদিনহো কোন পর্যায় থেকে উঠে এসেছে এটা তো সবাই জানে। আমাদের দেশেও অনেক প্রতিভা আছে। সেগুলো তুলে আনতে পদক্ষেপ নিতে হবে। হামজার মত প্রবাসীদের অন্তর্ভুক্তি অবশ্যই আমাদের দেশের ফুটবলের জন্য ইতিবাচক। কিন্তু অনেকে লিগে শুরুর একাদশে না থাকলেও জাতীয় দলে ঠিকই আছে। আমি মূলত এই বিষয়গুলো আমার জায়গা থেকে বলতে চেয়েছি।’
চলমান লিগে ৫ গোল করে দেশী খেলোয়াড়দের মধ্যে দ্বিতীয় অবস্থানে আছেন জীবন। এছাড়াও ফেডারেশন কাপে তার আছে তিনটি গোল। তারপরও তাকে ৩৫ জনের প্রাথমিক দলেও বিবেচনা করা হয়নি। এছাড়াও প্রাথমিক দলে ডেকে প্র্যাকটিস না করিয়ে ৮ জন খেলোয়াড়কে বাদ দেয়া হয়েছে, যা অপমানজনই মনে করছেন তিনি।
তবে শেষ দিকে জানালেন এখন সমালোচনায় কিছু যায় আসে না তার, বরং লিগে পারফর্ম করেও যারা জাতীয় দলে জায়গা পায়না তাদের অবস্থাটা দেখার আহ্বান এই ফরোয়ার্ডের,
‘মানুষ আমার কথা ভুল বুঝে সমালোচনা করছে। এতে আমার কিছু যায় আসে না। আমি হয়তো আর কয়েক বছর পর ফুটবলই ছেড়ে দেব। এতদিন ধরে খেলেছি, ভালো খেলি আর খারাপ খেলি এখন আর জাতীয় দলে খেলার স্বপ্ন দেখি না। কিন্তু আমার কথা হলো লিগে পারফর্ম করেও যারা জাতীয় দলে জায়গা পায়না তাদের অবস্থাটাও দেখতে হবে। আমরা কেমন মাঠে খেলি, কেমন সুযোগ সুবিধা পাই সেগুলো নিয়েও কথা বলা উচিত। দেশটা আমারও, তাই এসব নিয়ে কথা বলার অধিকার আমারও আছে।’