ঢাকায় জাতীয় স্টেডিয়ামে তিন দিনব্যাপী প্রবাসী ফুটবলারদের ট্রায়াল শেষ হয়েছে গতকাল। বেশ উৎসবমুখর পরিবেশে এই ট্রায়াল অনুষ্ঠিত হলেও, এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে জানানো হয়নি কে কে চূড়ান্তভাবে নির্বাচিত হয়েছেন। আজ বাফুফের টেকনিক্যাল ডিরেক্টর সাইফুল বারী টিটু সংবাদ সম্মেলনে ট্রায়ালের বিভিন্ন দিক নিয়ে কথা বলেন, তবে কারা ট্রায়ালে উত্তীর্ণ হয়েছেন সে বিষয়ে স্পষ্ট কোনো তালিকা প্রকাশ করেননি।
বাফুফে ভবনে আয়োজিত এই সংবাদ সম্মেলনে টিটু বলেন, “এটা একটা লম্বা প্রক্রিয়া। যাদের বয়স মাত্র ১৮-১৯, তাদের উন্নতির অনেক সুযোগ রয়েছে। আমরা তাদের সঙ্গে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রাখবো। সামনে আমাদের বয়সভিত্তিক ক্যাম্পে কোচরা এই ট্রায়ালের তথ্য বিবেচনা করে প্রয়োজনীয় খেলোয়াড়দের দেখবেন।”
টিটুর বক্তব্য অনুযায়ী অনূর্ধ্ব-২৩ দল গঠনের আগে প্রবাসী ফুটবলারদের পারফরম্যান্স পর্যালোচনা করা হবে এবং প্রয়োজন অনুযায়ী সুযোগ দেওয়া হতে পারে। তিনি আরও বলেন, “আমরা ট্রায়ালে আসা প্রত্যেক ফুটবলারকে নিবিড়ভাবে বিশ্লেষণ করবো। আমরা চোখে দেখেছি, আবার ভিডিও করা হয়েছে। সেগুলো দেখা হবে। আমাদের সামনে এএফসি অ-১৭ টুর্নামেন্ট রয়েছে। এখানে ট্রায়ালে আসা অনেকেরই বয়সসীমা নেই। এএফসি অ-২৩ টুর্নামেন্টের প্রস্তুতি জুলাই মাসের শেষ দিকে শুরু হবে। সেখানে হয়তো ফুটবলারদের দেখা যেতে পারে।”
ফুটবলীয় গুণগত মানকেই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করেন টিটু। তার ভাষায়, “সবাই বাংলাদেশি। কোয়ালিটির বিচারেই দলে আসার ও খেলার সুযোগ পাবে। আমরা নিবিড়ভাবে বিশ্লেষণ করবো। একজনও যেন অবিচারের শিকার না হন। তারা সবাই আন্তরিকতা নিয়ে নিজেদের অর্থ ব্যয় করে এসেছেন। এজন্য পরিবারকে ধন্যবাদ জানাই আবারও।”
যদিও এখনো কারা নির্বাচিত হয়েছেন তা জানানো হয়নি, তবুও ফেডারেশনের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে যে সকল খেলোয়াড়দের তথ্য সংরক্ষণ করা হচ্ছে। “সব মিলিয়ে বলবো, এই মুহূর্তে যা দেখেছি, যাদের আমরা মনে করবো, বিভিন্ন সময়ে কাজে লাগবে, যারা ১৭-১৮ বছর বয়সী আছে। তাদের ডেটা আমাদের থাকবে। সবচেয়ে জরুরি হচ্ছে, মেধাবী যারা আছে, তাদের যেন আমরা খুঁজে পাই।”
এখনই জাতীয় দলে সুযোগ পাওয়ার মতো কেউ আছে কি না—এমন প্রশ্নে টিটু বলেন, “মূলত অনূর্ধ্ব-২৩ এর ক্যাম্প শুরু করবো জুলাইয়ের শুরুতে। এখান থেকে কয়েকজনকে তো আমরা দেখবোই। তবে বিদেশি হাইপ আছে বলে দেশি মেধাবী কেউ যেন বঞ্চিত না হয়, সেটা দেখতে হবে। সেই মানটা ওভাবে যাচাই করেই নেওয়া হবে। ভিডিওটা দেখে পর্যালোচনা করে অনূর্ব-২৩ দলের জন্য সিদ্ধান্ত নিবো। এখানে অনূর্ধ্ব-১৭ দলের খেলা আছে, কিন্তু এখানে ওরকম কেউ নাই।”
ট্রায়ালে অংশ নেওয়া বীতশোক চাকমা অনূর্ধ্ব-১৯ দলের ম্যাচে গোল করেছেন। তার খেলার ধরন প্রসঙ্গে টিটু বলেন, “বীতশোক এখানে কাল গোল করেছে। ওর স্টাইল, বল ধরার ব্যাপার, দৌড়ানো, টেকনিক্যাল স্কিল খুবই সুন্দর। কিন্তু যখন আমরা ওদেরকে ক্যাম্পে ডাকবো, তখন ওদের আসল ব্যাপারটা বেরিয়ে আসবে। ওই স্ট্যান্ডার্ডে ওরা কীভাবে বিহেভ করে, সেটা বেরিয়ে আসবে।”
সবমিলিয়ে ট্রায়াল দেওয়া ফুটবলারদের এখনো অপেক্ষার প্রহর শেষ হয়নি। বাফুফে তাদের পারফরম্যান্স এবং ডেটা গুরুত্ব দিয়ে পর্যবেক্ষণ করছে—যা ভবিষ্যতে জাতীয় দলের দরজায় কড়া নাড়ার সম্ভাবনা তৈরি করছে। এখন দেখার বিষয় পরবর্তী দল ঘোষণায় এখান থেকে কাদের সুযোগ দেওয়া হয়।