দ্বিতীয়বারের মতো দক্ষিণ এশিয়ার চ্যাম্পিয়ন। এবার প্রথমবারের মতো জায়গা করে নিয়েছে এশিয়ান কাপে। মায়ানমারের মাঠে যে স্বপ্ন রচনা করল বাংলাদেশের নারী দল, তার উদযাপন এবার হবে দেশের মাটিতে—ছাদখোলা বাসে! ফিরেই পাবে সংবর্ধনা, আয়োজনে থাকবে জমকালো রঙ।
গতকাল তুর্কমেনিস্তানকে ৭-০ গোলে উড়িয়ে দিয়ে বাছাইপর্ব শেষ করেছে বাংলাদেশ। তার আগেই অবশ্য এশিয়ান কাপ নিশ্চিত হয়েছে মায়ানমারকে হারিয়ে। আজ রাতেই দেশে ফিরছে পিটার বাটলারের দল। রাত যতই হোক, দেরি করতে চায় না বাফুফে। বিমানবন্দর থেকে সরাসরি নেওয়া হবে সংবর্ধনার ভেন্যুতে—হাতিরঝিলের এম্ফিথিয়েটারে।
বাফুফে সভাপতি তাবিথ আউয়াল বলেছেন, “মেয়েদের জন্য সংবর্ধনার আয়োজন করছি আমরা হাতিরঝিল সংলগ্ন এম্ফিথিয়েটারে। যত রাতই হোক, আমরা চাইছি তাৎক্ষণিকভাবে একটা সংবর্ধনা দিতে। কারণ কিছু মেয়ে আবার ভুটানে লিগ খেলতে যাবে।”
এই দলের অর্জন অনন্য। মেয়েরা শুধু মায়ানমারকে হারিয়ে চমক দেখায়নি, বাছাইয়ে তিন ম্যাচে তিন জয় আর ১৬ গোল করে শেষ করেছে অপরাজিত চ্যাম্পিয়ন হিসেবে। অথচ এই দলে ছিলেন না সাবিনা খাতুন, সানজিদা আক্তার, কৃষ্ণা রানী সরকার, মাসুরা পারভীনের মতো নিয়মিত তারকারা। বাটলার ভরসা রেখেছেন নবীনদের ওপর। সেই আস্থা ফিরিয়ে দিয়েছেন তহুরা, ঋতুপর্ণা, শামসুন্নাহার, স্বপ্নারা।
তুর্কমেনিস্তানের বিপক্ষে ম্যাচটা কার্যত একতরফা ছিল। প্রথমার্ধেই ৭ গোল করে সবকিছু বলে দিয়েছে দলটি। বক্সের বাইরে থেকে স্বপ্নার দারুণ গোল, উইং থেকে তহুরা-শামসুন্নাহারের দারুণ ক্রস ও ফিনিশিং—সব মিলিয়ে ছিল আত্মবিশ্বাসের ছাপ। দ্বিতীয়ার্ধে অবশ্য গোল হয়নি, তবে বাংলাদেশ সেই আধিপত্য ধরে রেখেছে।
এই দলটার মধ্যে ট্যাকটিক্যাল ডিসিপ্লিন, ফিটনেস আর স্পিড—তিনটিই স্পষ্ট। তাদের পারফরম্যান্স নিয়ে মুগ্ধ কোচও। আর দলের খেলোয়াড় মনিকা চাকমা বলছেন,
“এভাবে ম্যাচ বাই ম্যাচ ভালো খেলে যেতে চাই। পাশে থাকার জন্য সবাইকে ধন্যবাদ।”
তবে এই অর্জনের পেছনে একটা আক্ষেপও রয়ে গেছে। গত সাফ জয়ের পর যে দেড় কোটি টাকা পুরস্কার দেওয়ার প্রতিশ্রুতি ছিল, তার পুরোটা এখনো পায়নি নারী দল। আবার কোচিং স্টাফের সঙ্গে চলা দ্বন্দ্বও ছিল বড় বিষয়। কিন্তু মাঠে তার কিছুই দেখাননি ফুটবলাররা।
আজ রাতে ফিরছে দল। তাদের বরণ করতে প্রস্তুত ফুটবলপ্রেমীরা।