এএফসি অ-২৩ চ্যাম্পিয়নশিপের বাছাইয়ে বাংলাদেশ কখনো মূলপর্বে উঠতে পারেনি। এবার ভিয়েতনামে ইতিহাস গড়ার লক্ষ্য নিয়েই আগামীকাল মধ্যরাতে দেশ ছাড়বে দল। স্বাগতিক ভিয়েতনাম, ইয়েমেন ও সিঙ্গাপুরকে নিয়ে সি গ্রুপে লড়াইয়ে নামবে মোরসালিন-জায়ানরা।
প্রথমবারের মতো বিদেশে ক্যাম্প ও প্রস্তুতি ম্যাচ খেলার সুযোগ পেয়েছে বাংলাদেশ অ-২৩ দল। বাহরাইনে শক্তিশালী প্রতিপক্ষের বিপক্ষে দুটি ম্যাচ খেলে প্রস্তুতিও সেরেছে। তাই এবার আগের যে কোনো আসরের চেয়ে বেশি আত্মবিশ্বাস নিয়েই মাঠে নামতে যাচ্ছে দলটি। হেড কোচ সাইফুল বারী টিটুর মতে, প্রথম ম্যাচে স্বাগতিক ভিয়েতনামের বিপক্ষেই ভাগ্য অনেকটা নির্ধারণ হয়ে যাবে।
এএফসি অ-২৩ বাছাইয়ে এশিয়ার ৪৪ দেশ অংশ নিচ্ছে। এগারো গ্রুপের চ্যাম্পিয়ন ও সেরা চার রানার্স আপ আগামী বছর সৌদি আরবে মূল পর্বে খেলবে। বাংলাদেশ কোচ সাইফুল বারী টিটু বললেন,“এই আসরে আমরা কখনো মূল পর্বে খেলিনি। এবার বাস্তবিক অর্থেই আমাদের চূড়ান্ত পর্বে খেলার সুযোগ রয়েছে। এজন্য প্রথম ম্যাচ ভিয়েতনামের বিপক্ষে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। সিঙ্গাপুর ও ইয়েমেনকে আমরা পর্যালোচনা করেছি। তারা যেহেতু ম্যাচ খেলবে প্রথম দিনই তাদের আরো বিশ্লেষণ করার সুযোগ পাব।”
র্যাংকিং ও সিডিংয়ে বাংলাদেশ গ্রুপে নিচে থাকলেও আশাবাদী শেখ মোরসালিন,“আমরা তিনটি ম্যাচই জিততে চাই। পরের পর্বে খেলার জন্যই আমরা ভিয়েতনাম যাচ্ছি। দলের সবাই উজ্জীবিত।”
৩ সেপ্টেম্বর ভিয়েতনামের বিপক্ষে ম্যাচে ইতালিয়ান প্রবাসী ফাহমিদুল ইসলামের খেলার সম্ভাবনা কম। এ প্রসঙ্গে টিটু বলেন,“ফাহমিদুল পহেলা সেপ্টেম্বর ভিয়েতনাম আসবে। একটি অনুশীলন সেশন করেই দলের সঙ্গে খেলা বেমানান হয়। পরের দুই ম্যাচ সে খেলবে। প্রথম ম্যাচে প্রয়োজন হলে বদলি হিসেবে নামানো হতে পারে।”
দলে রয়েছেন প্রবাসী জায়ান আহমেদ (যুক্তরাষ্ট্র), তানিল সালিক ও কিউবা মিচেল (ইংল্যান্ড), ফাহমিদুল ইসলাম (ইতালি)। বাহরাইনে দুর্দান্ত খেলে বিশেষ করে জায়ান আহমেদ নজর কেড়েছেন।
শেখ মোরসালিন এবার দলের আর্মব্যান্ড পাবেন। অতীত বিতর্ক ভুলে তিনি বললেন,“দলের শৃঙ্খলার ব্যাপারে আমি সচেষ্ট। সবাই দেশের জন্য সেরাটাই দেবে।”
ম্যানেজার শাহীন হাসান জানিয়েছেন, ফাহমিদুলকে আগে না পাওয়ার কারণ তার ক্লাব বদল,“ফাহমিদুল ইতালিতে ক্লাব বদল করেছে। সেখান থেকে ছুটি পেতে সময় লেগেছে। ক্লাব ছাড়তে না পারায় পহেলা সেপ্টেম্বরের আগে তার আসা সম্ভব হয়নি।”
এদিকে, দলের প্রস্তুতিতে যোগ দিয়েছেন সিনিয়র দলের হেড কোচ হ্যাভিয়ের ক্যাবরেরাও। বিষয়টি অযাচিত হস্তক্ষেপ মনে হলেও টিটু দেখছেন ভিন্নভাবে,“আমি টেকনিক্যাল ডাইরেক্টর, তিনি জাতীয় দলের হেড কোচ। সামনে হংকং ম্যাচে আমাদের কয়েকজন খেলোয়াড় খেলবে। তাই একসঙ্গে আলোচনা ও কাজ করায় কোনো সমস্যা নেই।”
তবে সমালোচনা আছে বাফুফের দিকেও। বিদেশযাত্রার আগে অ-২৩ দলের আনুষ্ঠানিক সংবাদ সম্মেলন না করায় স্পনসর প্রতিষ্ঠানগুলো তাদের প্রাপ্য প্রচার থেকে বঞ্চিত হয়েছে।
এত কিছুর মাঝেও মোরসালিন-জায়ানদের লক্ষ্য স্পষ্ট—প্রথমবারের মতো এএফসি অ-২৩ চ্যাম্পিয়নশিপের মূলপর্বে জায়গা করে নেওয়া।