লাওসে আজ বিকেলে দক্ষিণ কোরিয়ার মুখোমুখি হবে বাংলাদেশের অনূর্ধ্ব-২০ নারী ফুটবল দল। জিতলেই প্রথমবারের মতো এশিয়ান কাপের মূলপর্বে জায়গা হবে তাদের। ড্র করলেও মিলবে সেই স্বপ্নের টিকিট, হারলেও থাকছে রানার্সআপ হয়ে ইতিহাস গড়ার সুযোগ।

লাওসে যাওয়ার আগে প্রশ্ন করা হয়েছিল, দক্ষিণ কোরিয়াকে কি হারানো সম্ভব? বাংলাদেশ কোচ পিটার বাটলারের উত্তর ছিল, কাগজে-কলমে হয়তো না, তবে ফুটবলে যেকোনো কিছুই সম্ভব।”

অনূর্ধ্ব-২০ নারী এশিয়ান কাপের বাছাই পেরোনোর অভিজ্ঞতা আগে কখনো হয়নি বাংলাদেশের। এবার স্বপ্নের পালে লেগেছে জোর হাওয়া। মাসখানেক আগেই প্রথমবারের মতো এশিয়ান কাপে জায়গা করে নেয় জাতীয় নারী ফুটবল দল। হাতছানি দিচ্ছে আরও একটি ইতিহাস। যেখানে সবচেয়ে বড় বাধা দক্ষিণ কোরিয়া।

বাছাইয়ের শেষ ম্যাচে আজ বেলা ৩টায় লাওসের জাতীয় স্টেডিয়ামে দক্ষিণ কোরিয়ার মুখোমুখি হবে বাংলাদেশ। ২ ম্যাচে ৬ পয়েন্ট নিয়ে ‘এইচ’ গ্রুপের শীর্ষে আছে আফঈদা-সাগরিকারা। প্রথম ম্যাচে স্বাগতিক লাওসকে ৩-১ গোলে হারানোর পর দ্বিতীয় ম্যাচে পূর্ব তিমুরকে উড়িয়ে দেয় ৮-০ গোলে।

দুই ম্যাচ মিলিয়ে বাংলাদেশ প্রতিপক্ষের জালে জড়িয়েছে ১১ গোল। সমান ৬ পয়েন্ট থাকার পরও গোল গড়ে পিছিয়ে থাকায় টেবিলের দুইয়ে আছে দক্ষিণ কোরিয়া। ড্র করলেই মূলপর্বের টিকিট নিশ্চিত হবে বাংলাদেশের, কারণ মুখোমুখি ফলাফলে এগিয়ে থাকবে তারা। তবে প্রতিপক্ষ যখন দক্ষিণ কোরিয়া, তখন গোল হজমের শঙ্কা থেকেই যায়। এশিয়ান কাপের সব আসরেই খেলেছে তারা, আর চ্যাম্পিয়ন হয়েছে দুবার।

বাংলাদেশের সহকারী কোচ মাহমুদা আক্তারের আশা, মেয়েরা ভালো কিছু উপহার দেবে—দক্ষিণ কোরিয়া যদিও অনেক শক্তিশালী দল। আশা করছি, ভালো কিছু উপহার দিতে পারব। মানুষের মুখে হাসি ফোটাতে পারব।”

লাওসের লড়াই হতে পারে বাংলাদেশের অনুপ্রেরণা। দক্ষিণ কোরিয়ার বিপক্ষে শেষ পর্যন্ত ১-০ গোলে হেরে গেলেও ৮৩ মিনিট পর্যন্ত গোল বঞ্চিত রেখেছিল স্বাগতিকরা। বাংলাদেশ যদি সেভাবে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে পারে, তাহলে অঘটনও ঘটতে পারে। তবে এজন্য কোচ বাটলারকে বদলাতে হতে পারে কৌশল। সাফ অনূর্ধ্ব-২০ থেকে শুরু করে এশিয়ান কাপ বাছাইয়ের আগের দুই ম্যাচে হাইলাইন ডিফেন্স খেলিয়েছেন তিনি। কিন্তু দক্ষিণ কোরিয়ার বিপক্ষে এই ছক ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে।

বাটলারের বার্তা স্পষ্ট—গোলের খোঁজে যেও না। সুযোগ তৈরি করো, ধৈর্য ধরো, গোল এমনিতেই এসে যাবে। সবকিছু এখন আমাদের হাতে।”

পূর্ব তিমুরকে হারানোর পর তিনি বলেছিলেন, দক্ষিণ কোরিয়ার বিপক্ষে ফল যেমনই হোক, মাঠ ছাড়তে চান মাথা উঁচু করে। হারের ব্যবধান যত কম রাখা যায়, ততই মূলপর্বে যাওয়ার সম্ভাবনা বাড়বে।

বাছাই থেকে আট চ্যাম্পিয়নের পাশাপাশি সেরা তিন রানার্সআপ জায়গা করে নেবে আগামী এপ্রিলে থাইল্যান্ডে অনুষ্ঠেয় মূলপর্বে। শেষ ম্যাচের আগে রানার্সআপদের মধ্যে গোল গড়ে এগিয়ে আছে জর্ডান (১১), দক্ষিণ কোরিয়া (১০) ও চায়নিজ তাইপে (৭)—সব দলেরই পয়েন্ট ৬। জর্ডান কাল খেলবে উজবেকিস্তানের বিপক্ষে, চায়নিজ তাইপে মুখোমুখি হবে অস্ট্রেলিয়ার। বড় অঘটন না ঘটলে তারা গ্রুপ রানার্সআপই থাকবে, আর গোল গড়ও কমবে। তাই বাংলাদেশ যদি ১ বা ২ গোলে হারে, রানার্সআপ হয়েও মূলপর্বে খেলার সম্ভাবনা থাকবে জোরালো।

Previous articleপ্রথমবার ফিফা ই-ওয়ার্ল্ড কাপ ২০২৫ কোয়ালিফায়ারে অংশ নিচ্ছে বাংলাদেশ 
Next articleকাতারের পথে বসুন্ধরা কিংস; পৌঁছে গেছেন কিউবা মিচেল!

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here