বাংলাদেশ নারী ফুটবল দল প্রথমবারের মতো আগামী বছর এশিয়ান কাপে খেলতে যাচ্ছে। ঐতিহাসিক এই আসরকে সামনে রেখে ইতোমধ্যেই প্রস্তুতি কার্যক্রম শুরু করেছে বাফুফে। পরিকল্পনার অংশ হিসেবে অক্টোবরের নারী ফিফা উইন্ডোতে থাইল্যান্ডে দুটি প্রীতি ম্যাচ খেলবে ঋতুপর্ণা চাকমারা।

বাফুফের নারী উইংয়ের প্রধান মাহফুজা আক্তার কিরণ আজ ফেডারেশন ভবনে সাংবাদিকদের বলেন, ‘অক্টোবর নারী ফিফা উইন্ডোতে আমরা থাইল্যান্ডে দু’টি ম্যাচ খেলব। এটা চূড়ান্ত হয়েছে। নভেম্বর উইন্ডোতে আমরা ঢাকায় ত্রিদেশীয় খেলার চেষ্টা করছি। এজন্য ভিয়েতনাম অন্য দলগুলোকে চিঠিও দিয়েছি।’

অক্টোবরে থাইল্যান্ডে দুই ম্যাচ খেলে বাংলাদেশ দল যাবে জাপানে। সেখানে সপ্তাহ তিনেক অনুশীলন করবে,‌ ‘জাপানে আমরা কোনো ম্যাচ খেলব না। সেখানে কয়েক সপ্তাহের অনুশীলন হবে। অক্টোবরের মতো নভেম্বর উইন্ডোতেও দু’টি ম্যাচ খেলব। এরপর অস্ট্রেলিয়া যাওয়ার পথে সিঙ্গাপুর-হংকং কিংবা মালয়েশিয়ায় ম্যাচ খেলতে পারি অথবা নিউজিল্যান্ডের সঙ্গেও আলোচনা হচ্ছে সেখানে খেলে অস্ট্রেলিয়া যেতে পারি। অ-২০ দল থাইল্যান্ডে এশিয়া কাপ খেলবে আগামী বছর মার্চে। সিনিয়র দলের সঙ্গে অ-২০ দলের খেলোয়াড়রাও থাকবে অনুশীলন ও ম্যাচগুলোতে।’

এক সময় বাংলাদেশ নারী ফুটবল দলের সঙ্গে অনেকে খেলতে চাইতো না। এখন বাংলাদেশের র‍্যাংকিং ১০৩। সর্বশেষ প্রকাশিত র‍্যাংকিংয়ে বাংলাদেশই সবচেয়ে বেশি উন্নতি করেছে। যা ফিফা বিশেষভাবে আলোকপাত করেছে। এরপরও নাকি কিরণকে যোগাযোগ করেই উইন্ডোর দল ঠিক করতে হয়, ‘সত্যিকার অর্থে বলতে গেলে ব্যক্তিগত যোগাযোগেই দল ঠিক হচ্ছে। আমার সঙ্গে অনেক দেশের পরিচয়। আগে তাদের সভাপতি, সেক্রেটারির সঙ্গে আলাপ করি। এরপর অফিসকে আনুষ্ঠানিক চিঠি দিতে বলি। র‍্যাংকিংয়ে প্রভাব এখনো পড়েনি তবে অবশ্যই সামনে পড়বে।’

পহেলা সেপ্টেম্বর থেকে বাফুফের মিশন অস্ট্রেলিয়া শুরু হওয়ার কথা ছিল। সেটা সপ্তাহ দু’য়েক পিছিয়ে যাচ্ছে। এই প্রসঙ্গে কিরণ বলেন,‌ ‘পিটার আসতে আসতে সেপ্টেম্বরের মাঝামাঝি। আমরা সেপ্টেম্বরের মাঝামাঝি অস্ট্রেলিয়ার জন্য আনুষ্ঠানিক প্রস্তুতি শুরু করব। সেই ক্যাম্প বাফুফে ভবনে হবে না। হোটেল বা অন্য কোথাও হতে পারে। তবে অনুশীলন ভেন্যু বসুন্ধরা কিংস কিংবা জাতীয় স্টেডিয়ামে হবে।’ বাফুফে নারীদের জন্য যে পরিকল্পনা নিয়েছে এতে কয়েক কোটি টাকা বাজেট প্রয়োজন। বাফুফের আর্থিক সীমাবদ্ধতা রয়েছে। নারীদের এশিয়া কাপ মিশনে আর্থিক দিক নিয়ে তেমন চিন্তা করছেন না কিরণ, ‘বাফুফে সভাপতি তাবিথ আউয়ালের সঙ্গে আমার এ নিয়ে আলোচনা হয়েছে। আর্থিক বিষয়ে সমস্যা হবে না তিনি বলেছেন।’

বাংলাদেশে নারী ফুটবল লিগ অনিয়মিত। চলতি বছর ১৫ ডিসেম্বর লিগ শুরুর কথা জানিয়েছেন কিরণ। এই লিগে অংশগ্রহণ করার জন্য ক্লাব লাইসেন্সিং প্রক্রিয়া ইতোমধ্যে শুরু হয়েছে। প্রিমিয়ার ও চ্যাম্পিয়নশিপ লিগের ক্লাবগুলোকে ইতোমধ্যে খেলার জন্য অনুরোধ করেছেন নারী উইংয়ের প্রধান। একটি শীর্ষ স্থানীয় প্রতিষ্ঠান নারী দল গঠনে আগ্রহ প্রকাশ করেছে এটা আগামী কয়েক দিন পর তিনি প্রকাশ করবেন বলে জানান সাংবাদিকদের।

তাবিথ আউয়ালের নেতৃত্বাধীন বাফুফের কমিটি ইতোমধ্যে প্রায় দশ মাস পার করেছে। এই সময়ের মধ্যে এখনো নারী ফুটবল কমিটি পূর্ণাঙ্গ হয়নি। চেয়ারম্যান কিরণই একা দায়িত্ব পালন করছেন। গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো সকল মিডিয়াকে আনুষ্ঠানিকভাবে আমন্ত্রণ জানিয়ে নিজ কক্ষে অনানুষ্ঠানিক ব্রিফিংয়ের চর্চা এখনো অব্যাহত রেখেছেন।

Previous articleএএফসি চ্যাম্পিয়নস লিগে আরটিসির হয়ে বাংলাদেশের পাঁচ ফুটবলারের লড়াই, শুরুতেই হার
Next articleকিউবা যোগ দিলেন অনূর্ধ্ব-২৩ ক্যাম্পে

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here