সংযুক্ত আরব আমিরাতের বিপক্ষে টানা দুই ম্যাচ হেরে গেলেও হতাশ নন বাংলাদেশ নারী ফুটবল দলের প্রধান কোচ পিটার জেমস বাটলার। বরং নতুন দলকে নিয়ে তার দৃষ্টিভঙ্গি ইতিবাচক। উইমেন’স সাফ চ্যাম্পিয়নশিপ জয়ের চার মাস পর আন্তর্জাতিক ফুটবলে ফিরে কঠিন পরীক্ষার মুখে পড়ে বাংলাদেশ। দল থেকে ১৮ জন খেলোয়াড়ের বিদ্রোহের কারণে একদম নতুন ও অনভিজ্ঞ একটি দল নিয়ে মাঠে নামতে হয়। যার ফলে প্রথম ও দ্বিতীয় দুই ম্যাচেই ৩-১ গোলের ব্যবধানে হারতে হয়েছে।

তবে ফলাফলকে বড় করে দেখছেন না বাটলার। তার মতে, জয়-পরাজয়ের চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো দলটির উন্নতি। নতুন খেলোয়াড়দের মানসিকতা ও প্রতিশ্রুতি দেখেই তিনি আশার আলো দেখছেন। বাংলাদেশ নারী ফুটবল দলের সাম্প্রতিক পরিস্থিতি সহজ ছিল না। সাবিনা খাতুন, ঋতুপর্ণা চাকমা, তহুরা খাতুনসহ বেশ কয়েকজন অভিজ্ঞ খেলোয়াড় বিদ্রোহের কারণে দলে ছিলেন না। এদের অনুপস্থিতিতে নতুনদের ওপর দায়িত্ব পড়ে, তবে তারা প্রত্যাশিত পারফরম্যান্স করতে পারেননি। শাহেদা আক্তার রিপা, আইরিন খাতুন, সুরভী আকন্দ প্রীতিরা আক্রমণভাগের দায়িত্ব পেলেও কোনো গোলের দেখা পাননি। তবে বাটলার এতে হতাশ নন, বরং নতুনদের সম্ভাবনা দেখছেন তিনি। তার মতে, ধৈর্য্য ধরতে হবে এবং ভবিষ্যতের দিকে তাকাতে হবে। তিনি বলেন,

“এই সফর নিয়ে যদি বলি, এই সপ্তাহ নিয়ে আমি খুবই গর্বিত। ফুটবলের সাথে আমি দীর্ঘদিন আছি। জিততে হবে, জিততে হবে— আমি এই মানসিকতার নই। আমার ভাবনায় উন্নতি। এই সপ্তাহে আমরা সেটা পেয়েছি, সেই মানসিকতা দেখেছি (মেয়েদের মধ্যে)। যখন আমরা এই মানসিকতার সাথে মানিয়ে নিতে পারব যে, আসুন ধৈর্য্য ধরি, উন্নতি করি, নতুন ভবিষ্যৎ সাজাই, তখন বাংলাদেশের (নারী) ফুটবল এই মেয়েদের হাত ধরে বেড়ে উঠবে।”

দ্বিতীয় ম্যাচে নতুনদের আরও বেশি সুযোগ দিয়েছিলেন বাটলার। মেঘলা, হালিমা, নবিরুনদের মতো খেলোয়াড়রা সুযোগ পেয়েছেন নিজেদের মেলে ধরার। তাদের পারফরম্যান্স নিয়ে আশাবাদী কোচ বলেন,

“আজকের ম্যাচে আমি অনেক পরিবর্তন করেছি। মেয়েদের খেলার সুযোগ দিয়েছি এবং এই তরুণীরা ভীষণ ইতিবাচক এবং দারুণ ফুটবল খেলেছে। তারা দারুণ মানসিকতা দেখিয়েছে।”

তবে অভিজ্ঞতা ও সুযোগ-সুবিধার ঘাটতির কারণে শক্তিশালী প্রতিপক্ষের সঙ্গে এখনই সমান তালে লড়াই করা সম্ভব নয় বলেও স্বীকার করেছেন তিনি। বাটলার বলেন,

“দেখুন, আমরা সেই দলের সাথে (এখনই) প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারব না, যাদের ২৩ জনের মধ্যে ১০-১২ জনই বিদেশি খেলোয়াড়, আমরা তাদের সুযোগ-সুবিধার সাথে লড়তে পারব না। আমরা তাদের সাথে লড়তে পারি উদ্দীপনা ও সাহস দিয়ে। সেখানে এই মেয়েদের নিয়ে আমি গর্বিত।”

বিদ্রোহের পর বড় পরিবর্তনের মুখে পড়া এই দলটিকে নিয়ে তিনি ভবিষ্যতের জন্য পরিকল্পনা করছেন, এবং মনে করেন, এই মেয়েদের হাত ধরেই বাংলাদেশ নারী ফুটবল এগিয়ে যাবে।

Previous articleভারতীয় হাইকমিশনে বাফুফে সভাপতি!
Next articleদেশে ফিরে সভাপতির সঙ্গে নারী ফুটবলারদের বৈঠক

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here