ছাত্র-জনতার আন্দোলনে উত্তাল নেপাল থেকে বিশেষ ফ্লাইটে নিরাপদে দেশে ফিরেছে বাংলাদেশ জাতীয় ফুটবল দল ও ক্রীড়া সাংবাদিকরা। আজ (বৃহস্পতিবার) বিকেল পৌনে পাঁচটার দিকে তারা কুর্মিটোলা সামরিক বিমানবন্দরে এসে পৌঁছান। বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর বিশেষ ফ্লাইটে ৩৭ জন খেলোয়াড়, কোচিং স্টাফ ও কর্মকর্তা ছাড়াও ১৭ জন ক্রীড়া সাংবাদিক ঢাকায় ফিরে আসেন। বিমানবন্দরে তাদের অভ্যর্থনা জানান বিমান, সেনাবাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা এবং বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের (বাফুফে) সভাপতি তাবিথ আউয়ালসহ গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিবর্গ।
কাঠমান্ডুতে অবস্থানকালীন সময়ে পরিস্থিতি ছিল বেশ উত্তপ্ত। সরকারবিরোধী আন্দোলনে নেপালজুড়ে জ্বালাও-পোড়াও চলছিল। এমনকি বাংলাদেশ দলের হোটেলের পাশেও আগুন জ্বলছিল, যা খেলোয়াড়দের মানসিকভাবে চাপে ফেলেছিল। টানা দুই-তিন দিন হোটেলবন্দি থাকায় ফুটবলাররা শারীরিক ও মানসিকভাবে বিপর্যস্ত ছিলেন।
বাফুফে সভাপতি তাবিথ আউয়াল বলেন, ‘আমাদের চিকিৎসার প্রক্রিয়া রয়েছে। মানসিক কোচিং, সাইকোলজিক্যাল সাপোর্ট দেবো যাদের প্রয়োজন হবে। যাদের লাগবে না তাদেরও আমরা অ্যাসেসমেন্ট করব, কারণ এ ধরনের পরিস্থিতিতে অনেক সময় শারীরিক শক হয়। বাংলাদেশ আর্মড ফোর্সের মেডিক্যাল টিম প্রস্তুত ছিল যেকোনো প্রয়োজনে সহায়তা দেওয়ার জন্য।’
পরিস্থিতির উত্তেজনা বিবেচনায় বাংলাদেশ ও নেপালের মধ্যকার দ্বিতীয় ম্যাচ আর অনুষ্ঠিত হয়নি। দলের নিরাপত্তার জন্য বিকল্প পরিকল্পনাও হাতে রেখেছিল বাফুফে। তাবিথ আউয়াল জানান, ‘আমাদের টিম হোটেলের পাশে আগুন লেগেছিল। আমরা আগেই দ্বিতীয় ও তৃতীয় লোকেশন ঠিক করে রেখেছিলাম।’
মিডিয়াকর্মীদের ফিরিয়ে আনার বিষয়েও গুরুত্ব দিয়েছে ফেডারেশন। সভাপতি বলেন, ‘আমরা শুধু ফুটবলারদের নয়, মিডিয়াসহ সবাইকে নিয়ে ফুটবলাঙ্গন। তাই রেসকিউ মিশনে সাংবাদিক ভাই-বোনদেরও অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছিল।’
কাঠমান্ডু বিমানবন্দর সচল হওয়ার ২০ ঘণ্টার মধ্যেই বাংলাদেশ দল ও সাংবাদিকরা ঢাকায় পৌঁছেছেন। এজন্য সংশ্লিষ্ট সকল পক্ষকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন বাফুফে সভাপতি। তিনি বলেন, ‘প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়, পররাষ্ট্র ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়, জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ, বাংলাদেশ দূতাবাস কাঠমান্ডুর সবাই আন্তরিকভাবে সহায়তা করেছে। বিশেষ কৃতজ্ঞতা বাংলাদেশ বিমানবাহিনী, আর্মি ও আর্মড ফোর্সেসকে।’
আর্মড ফোর্সেস ডিভিশনের ডিজি অপারেশন্স অ্যান্ড প্ল্যান বিগ্রেডিয়ার জেনারেল আলীমও এই মিশনে সহযোগিতাকারী সকলকে ধন্যবাদ জানান। তিনি বলেন, ‘সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী দেশ ও জনগণের প্রয়োজনে বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনী সবসময় আত্মনিয়োগে অঙ্গীকারবদ্ধ।’