এবারের মৌসুম শুরু থেকেই কিছুটা বিপাকে বসুন্ধরা কিংস। এএফসি চ্যালেঞ্জ লিগের মত আন্তর্জাতিক আসরের প্লে অফ খেলেছে হেড কোচ ছাড়াই। মৌখিক সম্মতি দিয়েও শেষ পর্যন্ত আসেননি ব্রাজিলিয়ান কোচ সার্জিও ফারিয়াস। এবার নতুন মৌসুমের জন্য অভিজ্ঞ আর্জেন্টাইন কোচ রবার্তো কার্লোস মারিও গোমেজকে নতুন কোচ হিসেবে নিয়োগ দিয়েছে ক্লাবটি।

৬৮ বছর বয়সী এই আর্জেন্টাইন কোচের ক্যারিয়ার রঙিন অভিজ্ঞতায় ভরা। খেলোয়াড়ী জীবনে তিনি ডিফেন্ডার হিসেবে খেলেছেন এবং ফেরো কারিল ওয়েস্তে ক্লাবের হয়ে ১৯৮২ ও ১৯৮৪ সালে আর্জেন্টিনা লিগ শিরোপা জিতেছিলেন। তবে আসল পরিচিতি আসে কোচিং ক্যারিয়ারে। কাজ করেছেন ভ্যালেন্সিয়া, ইন্টার মিলানের মত ক্লাবে; জিতেছেন এএফসি কাপের শিরোপা!

আর্জেন্টাইন হেক্টর কুপারের সহকারী হিসেবে লানুস ক্লাবে ১৯৯৫ সালে কোচিং শুরু করেন মারিও গোমেজ। পরবর্তীতে কুপারের সঙ্গে তিনি আসেন ইউরোপে। যেখানে স্পেনের মায়োর্কা, ভ্যালেন্সিয়া এবং ইতালির ইন্টার মিলানে কাজ করেছেন।

১৯৯৭ থেকে ১৯৯৯ সাল পর্যন্ত সহকারী কোচ হিসেবে তিনি কাজ করেন মায়োর্কাতে, যেখানে দলকে কোপা দেল রে ফাইনাল ও কাপ উইনার্স কাপের ফাইনালে তোলার পেছনে বড় ভূমিকা রাখেন। এরপর ১৯৯৯ থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত কুপারের সহকারী হিসেবে ভ্যালেন্সিয়াতে কাজ করেন। সেই সময় ভ্যালেন্সিয়া টানা দুটি চ্যাম্পিয়নস লিগ ফাইনাল খেলে, যেখানে দলে ছিলেন গায়িজকা মেন্দিয়েতা, পাবলো আইমার, ক্লদিও লোপেজ, স্যামুয়েল ইতো, সান্তিয়াগো কানিজারেসদের মতো তারকারা।

পরবর্তীতে ২০০১ থেকে ২০০৩ সাল পর্যন্ত কুপারের সঙ্গে তিনি কাজ করেন ইন্টার মিলানে, সেসময় দলটিতে ছিলেন রোনালদো নাজারিও, ক্রিশ্চিয়ান ভিয়েরি, হার্নান ক্রেসপো, জাভিয়ের জানেত্তিদের মতো বিশ্ববিখ্যাত খেলোয়াড়রা। এই সময় ইউরোপীয় ফুটবলের শীর্ষ স্তরে তার কোচিং অভিজ্ঞতা তৈরি হয়, যা তাকে পরবর্তীতে একজন হেড কোচ হিসেবে গড়ে তুলতে বড় ভূমিকা রাখে।

হেড কোচের ভূমিকায় তিনি আর্জেন্টিনায় লানুস, কুইলমেস, বেলগ্রানো, আতলেতিকো তুকুমান, ফেরো কারিল ওয়েস্তে, ডেপোর্তিভো আর্মেনিও, তায়েরেস রেমেদিওস দে এসকালাদা এবং জিমনাসিয়া দে লা প্লাতা ও জিমনাসিয়া দে জুজুয়াই-এর মতো ক্লাবের কোচের দায়িত্ব করেছেন। তার অধীনে জিমনাসিয়া দে জুজুয়াই ২০০৫ সালে আর্জেন্টিনার প্রিমেরা বি নাসিওনাল শিরোপা জিতে প্রিমেরা ডিভিশনে উন্নীত হয়।

দেশের বাইরেও গোমেজের অভিজ্ঞতা সমৃদ্ধ। তিনি গ্রিসের আস্তেরাস ত্রিপোলিস, ইকুয়েডরের দেপোর্তিভো কুয়েনকা, হংকংয়ের সাউথ চায়না, মালয়েশিয়ার জোহর দারুল তাজিম এবং ইন্দোনেশিয়ার পারসিব বান্দুং, বোরনেও এফসি ও আরেমা এফসির মতো ক্লাবের কোচ ছিলেন। বিশেষ করে জোহর দারুল তাজিমের হয়ে তিনি ২০১৫ সালে এএফসি কাপ জিতেন। এছাড়াও মালয়েশিয়ান সুপার লিগ, এফএ কাপ ও চ্যারিটি শিল্ড ট্রফি জিতিয়ে তিনি দারুণ জনপ্রিয়তা পান।

মারিও গোমেজের এই অভিজ্ঞতা এবার কাজে লাগানোর লক্ষ্য বসুন্ধরা কিংসের। এবারের মৌসুমে লিগ ও ফেডারেশন কাপ সহ ঘরোয়া ফুটবলে ৫ টি শিরোপা নিষ্পত্তি হবে। একইসঙ্গে খেলতে হবে এএফসি চ্যালেঞ্জ লিগের গ্রুপ পর্বে। ঘরোয়া ফুটবলে আধিপত্য ধরে রাখা ক্লাবটি এশিয়ান মঞ্চেও বড় সাফল্য পেতে চায়, আর সেই লক্ষ্যেই এই অভিজ্ঞ আর্জেন্টাইনকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।

Previous articleভারতের হারের ক্ষত ভুলে নেপালের বিপক্ষে ফেরার লড়াইয়ে বাংলাদেশ
Next articleনেপালের বিপক্ষে দাপুটে জয়ে ঘুরে দাঁড়াল বাংলাদেশ

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here