এএফসি উইমেন’স এশিয়ান কাপের বাছাইয়ে রীতিমতো ঝড় তুলে যাত্রা শুরু করল বাংলাদেশ নারী ফুটবল দল। র্যাঙ্কিংয়ে অনেক এগিয়ে থাকা বাহরাইনের জালে একের পর এক গোল করে ৭-০ ব্যবধানের বড় জয় তুলে নিয়েছে গোলাম রব্বানীর শিষ্যরা। শামসুন্নাহার জুনিয়র, ঋতুপর্ণা, তহুরা, কোহাতি ও মুনকির গোল উৎসবে রাঙিয়েছে ম্যাচ।
মিয়ানমারের ইয়াংগুনে রোববার ‘সি’ গ্রুপে নিজেদের প্রথম ম্যাচে বাহরাইনকে ৭-০ গোলে বিধ্বস্ত করে বাংলাদেশ। প্রথমার্ধেই আসে পাঁচটি গোল, দ্বিতীয়ার্ধে আরও দুটি। দলের আক্রমণভাগ থেকে রক্ষণ—সব জায়গায় ছিল দারুণ শৃঙ্খলা ও আধিপত্য।
কিক অফের পরপরই ম্যাচের রাশ নিজেদের করে নেয় বাংলাদেশ। ম্যাচের প্রথম মিনিটেই ঋতুপর্ণার দূরপাল্লার শট বাহরাইনের গোলকিপার ঠেকালেও তা ছিল প্রতিপক্ষকে বার্তা দেওয়ার মতো।
১০তম মিনিটে আসে প্রথম গোল। মাঝমাঠ থেকে আসা লম্বা বল দারুণ নিয়ন্ত্রণে নিয়ে অফসাইড ফাঁদ ভেঙে বক্সে ঢোকেন শামসুন্নাহার জুনিয়র। আগুয়ান গোলকিপারের ওপর দিয়ে দারুণ এক চিপ শটে দলকে এগিয়ে নেন তিনি।
৫ মিনিট পরই ব্যবধান দ্বিগুণ করেন ঋতুপর্ণা চাকমা। স্বপ্নার আড়াআড়ি পাস ধরে বক্সে ঢুকে বাঁ পায়ের দৃষ্টিনন্দন বাঁকানো শটে গোলরক্ষককে পরাস্ত করেন এই মিডফিল্ডার।
একাধিক সুযোগ তৈরি করতে থাকে বাংলাদেশ। মনিকা চাকমা একবার গোলরক্ষককে একা পেয়েও লক্ষ্যভ্রষ্ট শট নেন, আরেকটি মুহূর্তে তহুরার হেড অফসাইডের কারণে বাতিল হয়।
৪০তম মিনিটে আসে তৃতীয় গোল। মনিকার কর্নার থেকে বল পেয়ে মারিয়া বক্সে ক্রস বাড়ান, ডিফেন্ডাররা ক্লিয়ার করতে ব্যর্থ হলে কোহাতি কিসকু ঠেলেই জালে পাঠান।
প্রথমার্ধের যোগ করা সময়ে জোড়া গোল করে স্কোরলাইন ৫-০ করেন তহুরা খাতুন। প্রথম গোলটি প্রতিপক্ষ ডিফেন্ডারের ভুলে পাওয়া, আর দ্বিতীয়টি শামসুন্নাহারের কাটব্যাকে নিখুঁত টোকা।
দ্বিতীয়ার্ধেও থেমে থাকেনি বাংলাদেশ। ৬০তম মিনিটে শামসুন্নাহার জুনিয়রের টোকা বাহরাইনের খেলোয়াড় রাওয়ানের পায়ে লেগে জালে জড়ায়। আর ৭৪তম মিনিটে মুনকি আক্তার বক্সে ঢুকে বডি ডজ দিয়ে ডিফেন্ডারকে পরাস্ত করে নিচু শটে করেন শেষ গোলটি।
বদলি সাগরিকার একটি গোল অফসাইডের কারণে বাতিল হয়, আর একবার তহুরার শট লেগে ফিরে আসে ক্রসবার থেকে।
বাছাইয়ে দুর্দান্ত শুরু করা বাংলাদেশ গ্রুপের দ্বিতীয় ম্যাচে আগামী বুধবার মুখোমুখি হবে স্বাগতিক মিয়ানমারের, যারা নিজেদের প্রথম ম্যাচে তুর্কমেনিস্তানকে ৮-০ গোলে হারিয়েছে। এই ম্যাচ হতে যাচ্ছে গ্রুপসেরা হওয়ার লড়াইয়ের মূল মঞ্চ।