কমলাপুরের বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ সিপাহি মোস্তফা কামাল স্টেডিয়ামে উত্তেজনাপূর্ণ লড়াইয়ে ইতিহাস গড়ল দিনাজপুর জেলা ফুটবল দল। দুইবারের লিড, প্রতিপক্ষের প্রত্যাবর্তন, অতিরিক্ত সময়ের নাটকীয় গোল—সব মিলিয়ে দারুণ এক ফাইনালে সিরাজগঞ্জকে ৩-২ ব্যবধানে হারিয়ে প্রথমবারের মতো জাতীয় ফুটবল চ্যাম্পিয়নশিপের মুকুট জিতে নেয় তারা।
দেশের উত্তরাঞ্চলের দুই জেলা দিনাজপুর ও সিরাজগঞ্জের মুকুট লড়াই জমে ওঠে শুরু থেকেই। শীতের শেষভাগে ঢাকার আবহাওয়া জমিয়ে তোলে দুই দলের লড়াই। আক্রমণ-প্রতি আক্রমণে রোমাঞ্চ ছড়ায় মাঠে আসা হাজারখানেক দর্শকের মাঝে।
১৩ মিনিটেই লিড নেয় দিনাজপুর। ডান দিক থেকে ইয়াসিন আলীর আড়াআড়ি ক্রসে গোলমুখে দারুণ হেডে লক্ষ্যভেদ করেন অধিনায়ক সাগর মোহান্ত। এরপর মোহাম্মদ আলীর একক প্রচেষ্টায় গোলের দারুণ সুযোগ পেলেও ভাগ্যে সায় মেলেনি সিরাজগঞ্জের।
বিরতির আগে বেশ কিছু আক্রমণ শানিয়েও সমতায় ফিরতে পারেনি সিরাজগঞ্জ। ১-০ ব্যবধানেই বিরতিতে যায় দিনাজপুর।

৬০ মিনিটে দিনের অন্যতম সেরা মুহূর্ত এনে দেন প্রদীপ সরেন। বক্সের বাইরে থেকে নেওয়া তাঁর বাঁ-পায়ের দুর্দান্ত ফ্রি কিকে লিড দ্বিগুণ করে দিনাজপুর। তবে দুই মিনিট পরই ফিরে আসে সিরাজগঞ্জ। বা প্রান্ত দিয়ে ড্রিবল করে ঢুকে নিচু শটে গোলরক্ষককে পরাস্ত করেন উজ্জ্বল হোসেন।
সমতায় ফেরার দারুণ সুযোগ দুইবার পেয়েছিলেন মোহাম্মদ আলী, তবে ফিনিশিংয়ের দুর্বলতায় তা অনর্থক যায়।
যোগ করা সময়ে পেনাল্টি পেয়ে ম্যাচে ফেরে সিরাজগঞ্জ। হাসান আলীর সফল স্পটকিকে ম্যাচ গড়ায় অতিরিক্ত সময়ে।
অতিরিক্ত সময়েও আক্রমণাত্মক ছিল দুই দল। শুরুর দারুণ সুযোগ হাতছাড়া করে সিরাজগঞ্জই। কিন্তু ১১ মিনিটে ইয়াসিন আলীর চমৎকার ভলিতে আবার লিড পায় দিনাজপুর—৩-২।
শেষদিকে সিরাজগঞ্জের সামনে ছিল আরও কয়েকটি সুযোগ। কিন্তু ফিনিশিংয়ের দুর্বলতা এবং দিনাজপুরের দৃঢ় রক্ষণ দেয়াল তাদের আর গোল দিতে দেয়নি। ৩-২ রোমাঞ্চকর জয় নিয়ে ইতিহাস গড়ে মাঠ ছাড়ে মোহাম্মদ শামীম আহমেদের দল।
ফাইনাল শেষে রানার্সআপ সিরাজগঞ্জ পায় তিন লাখ টাকা। চ্যাম্পিয়ন দিনাজপুরকে দেওয়া হয় পাঁচ লাখ টাকা পুরস্কার।




