ঘরের মাঠে দুর্দান্ত পারফরম্যান্স উপহার দিয়ে অ-২০ সাফ চ্যাম্পিয়নশিপের শিরোপা জয় করলো বাংলাদেশ। লিগ পদ্ধতিতে অনুষ্ঠিত এই আসরে ৬ ম্যাচ শেষে পূর্ণ ১৮ পয়েন্ট অর্জন করে অপরাজিত চ্যাম্পিয়ন পিটার বাটলার শিষ্যরা। শেষ ম্যাচে আজ নেপালকে ৪-০ গোলে বিধ্বস্ত করে শিরোপা নিশ্চিত করে বাঘিনীরা। নিষেধাজ্ঞা কাটিয়ে দলে ফিরেই আজ ৪টি গোলই করেছেন মোসাম্মৎ সাগরিকা।

উত্তরায় বিমান দুর্ঘটনায় নিহতদের স্মরণে মাঠে নামে দুই দল। শুরুতেই এক মিনিট নীরবতা পালন করেন খেলোয়াড়রা। সেই শোকাবহ পরিবেশেও দারুণ দৃঢ়তা দেখায় বাংলাদেশের মেয়েরা। কিংস অ্যারেনায় শুরু থেকেই ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ ছিল পিটার বাটলারের দলের হাতে।

দ্বিতীয় মিনিটেই গোলের সুবর্ণ সুযোগ তৈরি করেন সাগরিকা। প্রতিপক্ষের রক্ষণচেরা কাউন্টার অ্যাটাকে বল পেয়ে চিপ করে লক্ষ্যভেদ করতে চেয়েছিলেন তিনি, কিন্তু নেপালের গোলরক্ষক কোনোমতে কর্নারের বিনিময়ে রক্ষা করেন দলকে।

পঞ্চম মিনিটে কর্নার থেকে সাগরিকার হেড গোললাইন থেকে ফিরিয়ে দেন আনিশা রাই। তবে অষ্টম মিনিটে আর রক্ষা হয়নি। মাঝমাঠ থেকে স্বপ্নার নিখুঁত থ্রু পাসে অফসাইড ফাঁদ ভেঙে এগিয়ে যান সাগরিকা। নেপালের গোলকিপার সুজাতা তামাং বক্স ছেড়ে বের হলেও সাগরিকাকে আটকাতে পারেননি। দারুণ আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে গোলকিপারকে কাটিয়ে ডান পায়ে কোনাকুনি শটে বল জালে পাঠিয়ে দলকে ১-০ তে এগিয়ে দেন তিনি। তিন ম্যাচ নিষেধাজ্ঞা কাটিয়ে ফেরা এই স্ট্রাইকার যেন নিজের ফিরে আসাটা জোরালোভাবেই জানান দেন।

১৯ মিনিটে বিপদে পড়ে বাংলাদেশ। গোলরক্ষক মিলির গ্লাভস ফসকে বল ছিটকে গেলে পূর্ণিমা রাইয়ের ভলি দূরের পোস্টে আঘাত করে ফিরে আসে। ফিরতি চেষ্টায় সুক্রিয়া মিয়ার হেড দুর্দান্তভাবে রুখে দেন মিলি। ২১ মিনিটে মুনকির দূরপাল্লার শটও গোললাইন থেকে ক্লিয়ার করেন আনিশা রাই।

প্রথমার্ধে আর কোনো গোল না হলেও বলের দখল ও আক্রমণে এগিয়ে ছিল স্বাগতিকরা। ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে থেকেই ড্রেসিং রুমে যায় বাংলাদেশ।

বিরতির পর বাংলাদেশের আধিপত্য আরও স্পষ্ট হয়। ৫১ মিনিটে সাগরিকা তার দ্বিতীয় গোলটি করেন। উমেলহা মারমার পাস ধরে ঘুরে দাঁড়িয়ে চমৎকার শটে বল জালে জড়ান তিনি। এরপর ৫৮ মিনিটে হ্যাটট্রিক পূর্ণ করেন এই স্ট্রাইকার। রিতার লং পাস ধরে অফসাইড ফাঁদ ভেঙে এগিয়ে গিয়ে ডান পায়ের চিপে কিপারকে পরাস্ত করেন সাগরিকা। এটি চলতি টুর্নামেন্টে তার দ্বিতীয় হ্যাটট্রিক।

৭৭ মিনিটে সাগরিকা নিজের চতুর্থ গোলটি করেন। মুনকির পাস পেয়ে দুর্দান্ত ফিনিশিংয়ে স্কোরলাইন ৪-০ করেন তিনি। শেষ দিকে একাধিক সুযোগ পেলেও গোলের দেখা পায়নি নেপাল। শেষ পর্যন্ত সাগরিকার একক নৈপুণ্যে বড় জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে বাংলাদেশ। একইসঙ্গে ঘরে তুলে অ-২০ সাফ চ্যাম্পিয়নশিপের শিরোপা।

Previous articleশ্রীলঙ্কাকে হারিয়ে টানা পাঁচ জয়ে শীর্ষে বাংলাদেশ
Next articleসাফ জয়ের পর এএফসি চ্যালেঞ্জে সাগরিকারা

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here