আট মাসের বিরতি শেষে অবসর ভেঙে জাতীয় দলে ফিরলেন ভারতের কিংবদন্তি ফরোয়ার্ড সুনীল ছেত্রী। ভারতের ফুটবল ইতিহাসের সর্বোচ্চ গোলদাতা ছেত্রী গত বছর জাতীয় দল থেকে অবসর নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছিলেন। তবে বাংলাদেশের দলে হামজা চৌধুরীর অন্তর্ভুক্তি ও ইন্ডিয়ান সুপার লিগে আক্রমণভাগের খেলোয়াড়দের হতাশাজনক পারফরম্যান্স এবং জাতীয় দলে নির্ভরযোগ্য স্ট্রাইকারের অভাবে তাকে আবারও জাতীয় দলের দায়িত্ব নিতে হয়েছে। তার নেতৃত্বেই মার্চ ফিফা উইন্ডোতে বাংলাদেশের বিপক্ষে এএফসি এশিয়ান কাপের গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচ খেলতে নামবে স্বাগতিক ভারত।

ভারতের ২৬ সদস্যের স্কোয়াডে গোলরক্ষক হিসেবে অমরিন্দার সিং, গুরমিত সিং, বিশাল কাইথ রয়েছেন। তবে দলে নেই ভারতের নিয়মিত গোলকিপার গুরপ্রিত সিং সান্ধু। তার না থাকার কারণ ইনজুরি নাকি বিশ্রাম, সেটি নিশ্চিত করা যায়নি, কারণ ২ মার্চ তিনি আইএসএলে ইস্টবেঙ্গলের বিপক্ষে মাঠে নেমেছিলেন। কিন্তু জাতীয় দলের স্কোয়াডে নেই তার নাম।

রক্ষণভাগে দলকে নেতৃত্ব দেবেন সন্দেশ ঝিঙ্গান, যিনি ভারতের অন্যতম নির্ভরযোগ্য ডিফেন্ডার। তার সঙ্গে থাকবেন শুভাশিস বোস, যিনি লেফট-ব্যাকে ধারাবাহিক পারফরম্যান্স করে যাচ্ছেন এবং অভিজ্ঞতার কারণে ভারতের রক্ষণভাগের অন্যতম স্তম্ভ হয়ে উঠেছেন। এছাড়া, রাহুল ভেকে, আশিস রাই, চিংলেনসানা সিং কনশাম-এর মতো খেলোয়াড়রাও রক্ষণভাগকে আরও শক্তিশালী করবেন। তবে ভারতের জন্য বড় ধাক্কা হলো গুরুত্বপূর্ণ ডিফেন্ডার আনোয়ার আলী ইনজুরির কারণে দলে নেই। আনোয়ার আলী রক্ষণে দৃঢ়তা আনার পাশাপাশি বল নিয়ন্ত্রণেও দক্ষ, তার অনুপস্থিতি ভারতের রক্ষণভাগে বড় প্রভাব ফেলতে পারে।

মাঝমাঠে ব্র্যান্ডন ফার্নান্দেজ ভারতের অন্যতম সৃজনশীল খেলোয়াড় হিসেবে ভূমিকা রাখবেন। তার সেট-পিস দক্ষতা, নিখুঁত পাসিং এবং খেলার নিয়ন্ত্রণ ভারতীয় দলের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তার সঙ্গে লিস্টন কোলাসো, মহেশ সিং নাওরেম, সুরেশ সিং ওয়াংজাম থাকায় ভারতের মাঝমাঠ আক্রমণ গঠনে কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারবে।

আক্রমণভাগে সুনীল ছেত্রীর প্রত্যাবর্তন ভারতের জন্য সবচেয়ে বড় শক্তি। ভারতের কোচ মানুলো মারকুয়েজ তার অভিজ্ঞতা ও গোলস্কোরিং দক্ষতার ওপর ভরসা করছেন, কারণ আইএসএলে ভারতীয় স্ট্রাইকারদের দুর্বল ফর্ম দলে চাপ সৃষ্টি করেছিল। ছেত্রীর সঙ্গে মানভীর সিং, লালিয়ানজুয়ালা চাঙতে, ইরফান ইয়াদওয়াদ, ফারুখ চৌধুরি থাকায় ভারতের আক্রমণভাগ কিছুটা ভারসাম্য পেয়েছে।

বাংলাদেশ-ভারত ম্যাচ সবসময়ই উত্তেজনাপূর্ণ হয়ে থাকে। ভারতের অভিজ্ঞতা ও সুনীল ছেত্রীর প্রত্যাবর্তন দলকে আত্মবিশ্বাস দেবে, তবে বাংলাদেশও চ্যালেঞ্জ জানাতে প্রস্তুত। বিশেষ করে হামজা রহমানের রক্ষণ সামলানো ভারতের জন্য সহজ হবে না। মাঠে ভারতের আক্রমণভাগ কেমন পারফর্ম করে, সেটাই এখন দেখার বিষয়।

Previous articleফিফা র‍্যাংকিংয়ে নারীদের অবনতি!
Next articleসুনীলের ফেরা নিয়ে যা ভাবছে বাংলাদেশ দল

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here