হামজা চৌধুরী ও শমিত সোমদের আগমনে যেন নতুন প্রাণ ফিরে পেয়েছে দেশের ফুটবল। এক সময় যেখানে দেশের সমর্থকরা বুঁদ ছিল লিওনেল মেসি ও ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোর ম্যাজিক-এ, এখন তারা গর্বে ভাসছে লাল-সবুজ জার্সি গায়ে মাঠ কাঁপানো বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত ফুটবলারদের নিয়ে। প্রিমিয়ার লিগ ও কানাডিয়ান লিগে খেলা হামজা-শমিতদের কল্যাণেই আজ অপেক্ষাকৃত শক্তিশালী প্রতিপক্ষদের বিপক্ষেও লড়াই জমিয়ে দিচ্ছে বাংলাদেশ।
এশীয় ফুটবল এখন আগের চেয়ে অনেক বেশি প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ। এএফসি এশিয়ান কাপের বাছাইপর্বে বাংলাদেশ-ভারত কিংবা বাংলাদেশ-হংকংয়ের ম্যাচগুলোতে দেখা মিলছে দর্শক-পাগল পরিবেশের। গ্যালারিতে দর্শকদের ঢল, টিকিটের চাহিদা—সবই বলে দিচ্ছে, ফুটবল এখন দেশের মানুষের আবেগের জায়গা দখল করে নিয়েছে।
এই জাগরণে নিজের উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছেন বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগ তারকা হামজা চৌধুরী। হংকংয়ের বিপক্ষে ফিরতি লেগের ম্যাচ শেষে তিনি বলেন,‘দারুণ, একেবারে উঁচুমানের অভিজ্ঞতা। ইংল্যান্ডে খেলেছি, কিন্তু এখানকার এই স্টেডিয়ামটিও (কাই তাক স্পোর্টস পার্ক) সম্ভবত সেরাদের মধ্যে একটি। পরিবেশটা অসাধারণ, গোলপোস্টের পেছনে থাকা সমর্থকদের উচ্ছ্বাস দেখলেই বোঝা যায়, তারা কতটা দুর্দান্ত।’
হামজা আরও যোগ করেন, ‘এটাই তো ফুটবলে চাই, বিশেষ করে এশিয়ায়। এই খেলাটা আরও বড় হোক, বিশ্বমঞ্চে জায়গা পাক। এজন্য ধন্যবাদ জানাই হংকংয়ের সমর্থকদের। অবশ্যই ধন্যবাদ জানাই বাংলাদেশি সেই সমর্থকদেরও, যারা এখানে পর্যন্ত ভ্রমণ করে এসেছে।’
৫০ হাজার দর্শক ধারণক্ষমতার কাই তাক স্পোর্টস পার্কে মাঠে নামার আগে বাংলাদেশের অধিনায়ক জামাল ভূঁইয়া বলেছিলেন,‘খেলার সময় দর্শকদের উপস্থিতি তেমন একটা টের পাওয়া যায় না। কারণ, তখন শরীরে অ্যাড্রেনালিনের মাত্রা অনেক বেশি থাকে। ফলে মনোযোগ থাকে পুরোপুরি খেলায়।’
ম্যাচে সত্যিই পুরো মনোযোগ ছিল সফরকারীদের। তবে ৩৪ মিনিটে পিছিয়ে পড়ে বাংলাদেশ। শেষ মুহূর্তে (৮৪ মিনিটে) সমতায় ফিরলেও জয়ের দেখা আর পাওয়া যায়নি। একের পর এক সুযোগ নষ্ট করে ১-১ ড্র নিয়েই সন্তুষ্ট থাকতে হলো জামাল ভূঁইয়াদের। এতে এশিয়ান কাপে খেলার স্বপ্ন প্রায় শেষের পথে।
এই ফলাফলে খানিকটা হতাশ হামজা চৌধুরী বলেন,‘আজ হংকংয়ের বিপক্ষে পিছিয়ে পড়েও একটা সময় সমতায় ফেরে বাংলাদেশ। পরে আমাদের সামনে আবারও কিছু তৈরি করার মতো ভিত্তি তৈরি হয়েছে। তবে দিন শেষে একটু হতাশা রয়ে গেল।’