বাংলাদেশ ফুটবলের জন্য এক নতুন যুগের শুরু হতে যাচ্ছে, যেখানে ইংল্যান্ড প্রবাসী হামজা চৌধুরী জাতীয় দলের জার্সিতে প্রথমবার মাঠে নামবেন। এশিয়ান কাপের বাছাইপর্বের গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে ভারতের বিপক্ষে খেলতে তিনি আজ রাতেই বাংলাদেশের উদ্দেশ্যে রওনা দেবেন। দীর্ঘদিন ধরে আলোচনা ও অপেক্ষার পর, হামজা অবশেষে বাংলাদেশ দলের অংশ হয়ে তার নতুন যাত্রা শুরু করতে চলেছেন।
যদিও হামজা আগেও বাংলাদেশে এসেছেন, তবে এবারের সফর তার জন্য এক ভিন্ন রকমের অনুভূতি নিয়ে আসছে। কারণ, এবার তিনি বাংলাদেশের জাতীয় দলের ফুটবলার হিসেবে দেশে পা রাখতে চলেছেন। এই বিশেষ সফরে তার সঙ্গে থাকবেন তার মা, স্ত্রী, তিন সন্তান এবং দুই ভাই। হামজার বাবা আগে থেকেই বাংলাদেশে রয়েছেন। হামজার আশা, তার প্রথম ম্যাচটি মাঠে বসে তার পরিবার যেন একসঙ্গে উপভোগ করতে পারে।
আজ বাংলাদেশ সময় সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টায় শেফিল্ড ইউনাইটেডের হয়ে শেফিল্ড ওয়েডনেসডের বিপক্ষে খেলবেন হামজা চৌধুরী। এই ম্যাচটি খেলেই বাংলাদেশের উদ্দেশ্যে রওনা দেবেন তিনি। আগামীকাল সকাল সাড়ে এগারোটায় সিলেট ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করবে হামজাকে বহনকারী বিমানটি। বিমান বন্দর থেকে সরাসরি হবিগঞ্জের স্নানঘাটে নিজের গ্রামের বাড়িতে যাবেন হামজা।
সময়ের অভাবে হামজাকে সেভাবে সংবর্ধনা দিতে পারছে না বাফুফে। তবে বিমানবন্দরে বাফুফের বেশ কয়েকদিন শীর্ষ কর্তা তাকে স্বাগত জানাতে উপস্থিত থাকবেন বলে জানা গিয়েছে। বাফুফে নির্বাহী কমিটির কর্মকর্তাদের মধ্যে ইকবাল হোসেন, গোলাম গাউস, কামরুল হাসান হিলটন ও সাখওয়াত হোসেন সিলেট বিমানবন্দরে হামজাকে অভ্যর্থনা জানাতে যাবেন। পরে হামজা ও তার পরিবারের সঙ্গে বাফুফে কর্তারাও সিলেট থেকে যাবেন হবিগঞ্জ।
হামজার আগমনে তার গ্রাম স্নানঘাটে সাজসাজ রব। হামজাকে স্বাগত জানাতে রাস্তাজুড়ে তৈরি করা হয়েছে তোরণ। তার বাড়িতেও রয়েছে সাজসজ্জা। হামজার আত্মীয়স্বজন ও গ্রামবাসী তাকে বরণে অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছেন। একইসঙ্গে স্থানীয় প্রশাসন তার নিরাপত্তার দিকে সতর্ক নজর রাখছে। সামগ্রিক নিরাপত্তা ও সুযোগ-সুবিধার বিষয়গুলো নিশ্চিত করতে বাফুফে কর্তারা স্থানীয় প্রশাসনের সঙ্গে সর্বত্র যোগাযোগ রাখছেন।
ইংল্যান্ড থেকে হামজার বাবা মোর্শেদ দেওয়ান চৌধুরী আগেই বাংলাদেশে চলে এসেছেন। আজ রাতে হামজার সফরসঙ্গী হিসেবে মা, স্ত্রী, তিন সন্তান, দুই ভাইসহ মোট ৯ জন আসছেন। আগামীকাল সকালে নিজ বাড়িতে পৌঁছে সেখানেই রাত কাটাবেন হামজা। পরদিনও দিনের অনেকটা সময় গ্রামের বাড়িতে থাকার কথা হামজার।
১৮ মার্চ দিনের শেষ ফ্লাইটে বাফুফে কর্তাদের সঙ্গে ঢাকায় ফিরবেন হামজা চৌধুরী ও তার পরিবারের সদস্যরা। ১৯ মার্চ দুপুরে টিম হোটেলে কোচ হাভিয়ের ক্যাবরেরা ও অধিনায়ক জামাল ভূঁইয়ার সঙ্গে অফিশিয়াল প্রেস কনফারেন্সে গণমাধ্যমের মুখোমুখি হবেন তিনি। তার আগে সকালে হবে দলীয় ফটোসেশন। এরপর বিকেল অথবা সন্ধ্যায় দলের অনুশীলনে নামার কথা রয়েছে হামজার। তবে অনুশীলন হবে নাকি জিম সেশন হবে সেটি নির্ভর করছে কোচ কোচের সিদ্ধানের ওপর। ২০ মার্চ দলের সঙ্গে কলকাতা হয়ে শিলংয়ের উদ্দেশ্যে রওনা দেবেন তিনি।