৮ বছর পর অবশেষে ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগে ফিরলো সান্ডারল্যান্ড। চ্যাম্পিয়নশিপ প্লে-অফ ফাইনালে শেফিল্ড ইউনাইটেডকে ২-১ গোলে হারিয়ে স্বপ্নপূরণ করলো দলটি। ম্যাচের ইনজুরি সময়ে টম ওয়াটসনের গোলেই নিশ্চিত হয় দলটির ঐতিহাসিক জয়। একইসঙ্গে হারের হতাশায় আবারো চ্যাম্পিয়নশিপে থেকে যাওয়া নিশ্চিত হয় বাংলাদেশি তারকার হামজা চৌধুরীর।
১-১ গোলে ড্র থাকা ম্যাচের শেষ মুহূর্তে যখন সবাই প্রস্তুতি নিচ্ছিল অতিরিক্ত সময়ের জন্য, ঠিক তখনই ওয়াটসনের দুর্দান্ত শট জড়িয়ে যায় শেফিল্ডের জালে। গোল করেই ওয়াটসন খুলে ফেলেন জার্সি, হাঁটু গেড়ে স্লাইড করে ছুটে যান উল্লাসে ফেটে পড়া সমর্থকদের দিকে।
এর আগে ম্যাচের ২৫তম মিনিটে শর্ট কর্নার থেকে বল হারিয়ে ফেলে সান্ডারল্যান্ড। সেই সুযোগে শেফিল্ডের গুস্তাভো হ্যামার দারুণ পাস দেন টাইরিস ক্যাম্পবেলকে, চিপ শটে গোলরক্ষককে পরাস্ত করে দলকে এগিয়ে দেন তিনি।
মিনিট দশেক পর আরেকটি গোলের দেখা পেয়েছিল শেফিল্ড, তবে হ্যারিসন বারোসের গোলটি ভিএআরে বাতিল হয়। কারণ, ভিনিসিয়াস সুজা সান্ডারল্যান্ড গোলরক্ষক অ্যান্টনি প্যাটারসনের দৃষ্টিকে বাধাগ্রস্ত করছিলেন।
প্রথমার্ধে পিছিয়ে থাকলেও বল দখলে দাপট ছিল সান্ডারল্যান্ডের। দ্বিতীয়ার্ধে আক্রমণের ধার বাড়ায় সান্ডারল্যান্ড। ৭৬ মিনিটে এলিয়েজার মাইয়েন্ডা গোল করে সান্ডারল্যান্ডকে ম্যাচে ফেরান। এরপর ইনজুরি সময়ে দলের জয় নিশ্চিত করে দেন টম ওয়াটসন।
সান্ডারল্যান্ডের বিপক্ষে ম্যাচে হামজা চৌধুরীকে রাইট ব্যাক পজিশনে খেলানো হয়। পুরো ৯০ মিনিট মাঠে ছিলেন তিনি। এর মধ্যে ৮৮% সফল পাস দেন হামজা। এছাড়া ৬টি ক্লিয়ারেন্স ও ১টি শট ব্লক করেন হামজা।
তবে দিনশেষে শেফিল্ড ইউনাইটেড আরো এক মৌসুম থেকে যাচ্ছে চ্যাম্পিয়নশিপ লিগে। অথচ এই মৌসুমের একটা লম্বা সময় ধরে শীর্ষে ছিল তারা। তবে শেষ মুহূর্তে এসে পয়েন্ট হারিয়ে খেলতে হয় প্লে অফ। আর গুরুত্বপুর্ন এই ম্যাচে হারের স্বাদ পেয়ে আগামী মৌসুমে খেলা হলো না ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগে।
এই হারে নিজেদের একটি অপয়া রেকর্ড অব্যাহত রাখলো শেফিল্ড। এটি ছিল তাদের ১০ম প্লে-অফ অভিযান, যার ৯টিই ব্যর্থতায় শেষ হলো। ওয়েম্বলি ফাইনালেও এটি ছিল তাদের পঞ্চম উপস্থিতি, আগের চারটিতেই হারের পর এবারও সেই ধারাবাহিকতা বজায় থাকলো।
ব্যক্তিগতভাবে হতাশায় ডুবলেন হামজা চৌধুরীও। লোনে শেফিল্ডে যোগ দিয়ে তার মিডফিল্ড নিয়ন্ত্রণ ও কর্মঠতা ছিল চোখে পড়ার মতো। কিন্তু ফাইনালের মঞ্চে এসে দলীয় ব্যর্থতায় ছাপিয়ে গেল ব্যক্তিগত পারফরম্যান্স। একইসঙ্গে আগামী মৌসুমে তার ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগে ফেরার সম্ভাবনাও অনেকটাই ক্ষীণ হয়ে এল। কারণ হামজার মূল দল লেস্টার সিটি ইতিমধ্যেই রেলগেট হয়ে চ্যাম্পিয়নশিপে নেমে গিয়েছে। তাই আগামী মৌসুমে প্রিমিয়ার লিগের কোন ক্লাব তাকে দলে না নিলে খেলতে হবে দ্বিতীয় স্তরেই!