আগামী ১০ জুন ঘরের মাঠে এশিয়ান কাপ বাছাইপর্বে বাংলাদেশের প্রতিপক্ষ সিঙ্গাপুর। আর এই ম্যাচ দিয়েই দীর্ঘ সংস্কারের পর ম্যাচ আয়োজনে ফিরছে “হোম অফ ফুটবল” হিসেবে পরিচিত ঢাকার জাতীয় স্টেডিয়াম। ম্যাচকে ঘিরে লম্বা সময় ধরেই বড় ধরনের পরিকল্পনা হাতে নিয়ে কাজ করে যাচ্ছে বাফুফে। দেশের মাটিতে হামজা-সমিতদের প্রথম ম্যাচ এবং ফুটবলের পরিবর্তনের হাওয়ায় এই ম্যাচ ভিন্ন মাত্রা যোগ করেছে। দর্শকদের আগ্রহের কেন্দ্রে থাকা ম্যাচটি থেকে আয় বাড়াতে টিকিট বিক্রি, টিভি স্বত্ব এবং বিজ্ঞাপনসহ নানা খাতকে গুরুত্ব দিচ্ছে বাফুফে। এবার জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ (এনএসসি) বাফুফেকে আগেভাগেই মনে করিয়ে দিয়েছে —ম্যাচ থেকে আয় হওয়া বিভিন্ন খাত থেকে নির্দিষ্ট অংশ জাতীয় ক্রীড়া পরিষদকে দিতে হবে।
সাধারণ গ্যালারির ১৮,৩০০টি টিকিট অনলাইনে ছাড়া হয়েছে, ২ দিনের ব্যবধানে যার সবগুলোই বিক্রি হয়ে গেছে। এই টিকিটগুলো থেকে বাফুফের আয় প্রায় ৭৩ লাখ ২০ হাজার টাকা। এছাড়া ভিআইপি, স্কাই লাউঞ্জ এবং ক্লাব হাউজসহ অন্যান্য ক্যাটাগরির প্রায় ৪,০০০ টিকিট থেকেও প্রায় অর্ধকোটি টাকা আয় হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এনএসসি টিকিট বিক্রির আয় থেকে ১০% দাবি করেছে।
এছাড়া ম্যাচের টিভি সম্প্রচারের স্বত্ব টি-স্পোর্টস কিনে নিয়েছে। বাফুফে এই স্বত্ব কত টাকায় বিক্রি করেছে, তা জানায়নি। তবে এনএসসি টিভি স্বত্বের আয় থেকে ১৫% চেয়েছে। এছাড়াও স্টেডিয়ামে বসানো ডিজিটাল বোর্ডে বিজ্ঞাপন দেখিয়ে বাফুফে যা আয় করবে তার ৫০% দাবি করেছে এনএসসি।
মূলত দেশের সব স্টেডিয়ামের মালিকানা জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের অধীনে, তাই আইন অনুযায়ী টিকিটের আয় ও টিভি রাইটস থেকে তারা লভ্যাংশ চাইতে পারে। যদিও আগের এক যুগ ফুটবল স্টেডিয়ামে দর্শক না থাকায় তারা কোনো দাবি করেনি। তবে এখন যেহেতু ফুটবলে দর্শক ফিরেছে, এনএসসি আবার তাদের অবস্থান পরিষ্কার করছে।
এদিকে এখনো স্টেডিয়ামের কিছু কাজ বাকি রয়েছে। যেমন—চতুর্থ তলায় রাষ্ট্রীয় কাজ চলায় সেখানে এখনো চেয়ার বসানো হয়নি। সেই কাজ দ্রুত শেষ করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ। পাশাপাশি কিছু গ্যালারির সামনে টিনের ছাউনি ও অ্যাথলেটিক্স টাওয়ার থাকা নিয়েও আলোচনা হয়েছে।
সিঙ্গাপুর ম্যাচের আগে ৪ জুন বাংলাদেশ ভুটানের সঙ্গে প্রীতি ম্যাচ খেলবে। এই দুটি আন্তর্জাতিক ম্যাচ নির্বিঘ্ন করতে বাফুফে স্টেডিয়ামে থাকা বিভিন্ন ফেডারেশনের অফিস, দোকান ও যান চলাচল নিয়ন্ত্রণে রাখতে এনএসসিতে অনুরোধ করেছিল। সে অনুযায়ী এনএসসি ৩০ মে চিঠি দিয়ে জানিয়ে দেয় আগামী ২-৪ জুন ও ৮-১০ জুন ফেডারেশনগুলোর অফিস বন্ধ রাখতে হবে।
জাতীয় স্টেডিয়ামে রাগবি, হ্যান্ডবল, কুস্তি, সাইক্লিং, জিমন্যাস্টিক্স, উশু, স্পোর্টস মেডিসিন ও সাংবাদিকদের অফিস রয়েছে। দুইটি ম্যাচকে কেন্দ্র করে এই ফেডারেশনগুলোর কার্যক্রম বন্ধ রাখতে বলা হয়েছে ছয় দিনের জন্য। অথচ তাদের জন্য সৌজন্য টিকিটও এখনো দেয়নি বাফুফে। এই বিষয়টি নিয়ে ক্রীড়া অঙ্গনে বেশ আলোচনা হচ্ছে।