বাংলাদেশ জাতীয় দলের স্প্যানিশ কোচ হ্যাভিয়ের ক্যাবরেরাকে ঘিরে বিতর্ক যেন থামছেই না। এবার কঠোর সমালোচনায় মুখর হলেন বাফুফের আরেক নির্বাহী সদস্য ও সাবেক তারকা ফুটবলার ছাইদ হাসান কানন। কোচিং স্টাফের সিদ্ধান্ত, খেলোয়াড় বদল এবং ম্যাচ পরিকল্পনা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন তিনি।

বাংলাদেশ জাতীয় ফুটবল দলের হেড কোচ হ্যাভিয়ের ক্যাবরেরাকে নিয়ে সাম্প্রতিক সময়ে ফুটবলাঙ্গন ও গণমাধ্যমে সমালোচনার ঝড় বইছে। বাফুফের নির্বাহী সদস্য সাখওয়াত হোসেন ভূইয়া শাহীন তার পদত্যাগও চেয়েছেন। এবার বাফুফের আরেক সদস্য ছাইদ হাসান কাননও খোলাখুলি সমালোচনা করলেন স্প্যানিশ কোচ ও তার সহকারীদের।

আজ বসুন্ধরা কিংস অ্যারেনায় বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-২৩ দলের অনুশীলনের সময় সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে কোচ ক্যাবরেরা ও কোচিং স্টাফের বিভিন্ন সিদ্ধান্তকে প্রশ্নবিদ্ধ বলে উল্লেখ করেন কানন। যদিও তিনি সরাসরি কোচের পদত্যাগ চাননি, তবে ১০ জুন সিঙ্গাপুরের বিপক্ষে ম্যাচে কোচিং ভুলগুলো নিয়ে মুখ খোলেন তিনি।

ছাইদ হাসান কানন বলেন, ‘হোটেল থেকে দল যখন মাঠে আসে, হেড কোচ তখনও পৌঁছায়নি। এটা আমরা দেখেছি। একসঙ্গে চারজন খেলোয়াড় পরিবর্তন করাটা আমার কাছে খুব বাজে লেগেছে। একজন সাবেক খেলোয়াড়, কোচ এবং জাতীয় দল কমিটির সদস্য হিসেবে এই বিষয়গুলো হতাশ করেছে।’

সিঙ্গাপুর ম্যাচে কোচ হ্যাভিয়ের ক্যাবরেরার পরিকল্পনা, একাদশ নির্বাচন ও ম্যাচে খেলোয়াড় পরিবর্তনের কৌশল নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন কানন। তিনি বলেন, ‘আল আমিন নামার পর রাকিব কেন রাইট ব্যাকে গেল? জামাল ভূঁইয়াকে কেন মাঠে নামানো হয়নি? ভুটান ম্যাচে জামালের সেটপিস থেকেই হামজা গোল করেছিল। সিঙ্গাপুরের বিপক্ষে আমরা ১১টি সেটপিস পেয়েছিলাম—জামাল থাকলে অন্তত একটি গোলের সুযোগ পেতাম।’

সবচেয়ে বিস্ময়ের ব্যাপার ছিল, রাকিবের গোলের পর তাকে রাইটব্যাক পজিশনে পাঠানো। অথচ কোচ ক্যাবরেরা নাকি সেটাই জানতেন না! কাননের বিস্ময়, ‘কোচ বলছেন রাকিব যে রাইটব্যাক খেলেছে, সেটা তিনি জানতেন না! তাহলে কোচিং স্টাফের কাজ কী ছিল? এটা আসলেই প্রশ্নবিদ্ধ।’

খেলার দ্বিতীয়ার্ধে খেলোয়াড় বদলে চার থেকে পাঁচ মিনিট বিলম্ব হয়, যা ম্যাচের গতিপ্রবাহ বদলে দেয় বলে দাবি কাননের। ‘আমরা আগে কার্ড দিয়েছি অথচ প্রতিপক্ষের খেলোয়াড় আগে মাঠে ঢুকে গেছে। এতে চার মিনিট নষ্ট হয়েছে এবং আমাদের টেম্পো নষ্ট হয়েছে,’ বলেন তিনি।

প্রথমার্ধের শেষ দিকে গোল খাওয়ার জন্যও কোচিং স্টাফের দায় দেখেন কানন। তার মতে, ‘তাপমাত্রা তখন ৪০ ডিগ্রি ছিল। এমন অবস্থায় কোচের বলা উচিত ছিল—আর মাত্র তিন মিনিট বাকি, গোল খেয়ো না। দ্বিতীয়ার্ধে ঘুরে দাঁড়াবে।’

হামজা চৌধুরি ও শমিত শোমের মতো তারকা ফুটবলার আসার পরও এশিয়ান কাপ বাছাইয়ে বাংলাদেশের জয়শূন্য থাকা নিয়েও কোচ ক্যাবরেরার দিকেই আঙুল তুলেছেন অনেকেই। এ প্রসঙ্গে কানন বলেন, ‘কমিটির সদস্য হিসেবে আমরা পরামর্শ দিতে পারি। তবে সিদ্ধান্ত নেওয়ার এখতিয়ার জাতীয় দল কমিটির চেয়ারম্যান তাবিথ আউয়ালের।’

সেপ্টেম্বর ফিফা উইন্ডোতে জাতীয় দল ও অনূর্ধ্ব-২৩ দলের আলাদা ম্যাচ থাকায় বাফুফে কমিটির অধীনে দুটি উপকমিটি গঠন করা হয়েছে। এই কমিটি গঠনের ফলে এখন কোচদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করার সুযোগ আসবে বলেও আশাবাদ জানান কানন। ‘আগে কোচের সঙ্গে আমাদের কোনো সরাসরি সংযোগ ছিল না। এখন কমিটি গঠনের ফলে পরামর্শ দেয়ার সুযোগ তৈরি হয়েছে,’ বলেন তিনি।

এই বক্তব্যগুলো ফুটবল অঙ্গনের সাম্প্রতিক অস্থিরতা ও কোচ হ্যাভিয়ের ক্যাবরেরার ভবিষ্যৎ নিয়ে নতুন করে আলোচনা উসকে দিয়েছে।

Previous articleলাওসে পৌঁছেছে আফিদারা, এএফসি বাছাইয়ে নজর প্রথম ম্যাচে

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here