এশিয়ার মঞ্চে আরো একবার উড়তে যাচ্ছে বাংলাদেশের পতাকা। এএফসি চ্যালেঞ্জ লিগের প্লে অফে মাঠে নামছে বাংলাদেশের দুই প্রতিনিধি ঢাকা আবাহনী ও বসুন্ধরা কিংস। প্লে অফ ম্যাচে জয় পেলেই গ্রুপ পর্বে খেলার সুযোগ মিলবে। তাই আজ আনুষ্ঠানিকভাবে দুই ক্লাব নিচ্ছে এএফসি চ্যালেঞ্জ লিগের চ্যালেঞ্জ!

বিকেল ০৫ টায় ঢাকার জাতীয় স্টেডিয়ামে কিরগিজস্তানের ক্লাব মুরাস ইউনাইটেডের মুখোমুখি হবে ঢাকা আবাহনী। ২০১৯ সালে এএফসি কাপের ইন্টার জোনাল সেমি ফাইনাল খেলেছিল—যা এখন পর্যন্ত কোনো বাংলাদেশি ক্লাবের সেরা অর্জন। এই মাঠেই উত্তর কোরিয়ার ক্লাব এপ্রিল টোয়েন্টি ফাইভের বিপক্ষে জয় পেয়েছিল আবাহনী। এএফসির আসরে তাদের রেকর্ড ২৪ ম্যাচে ৮ জয়, ৫ ড্র ও ১১ হার। কোচ মারুফুল হকের নেতৃত্বে এবারের দলেও আছেন ইয়াসিন খান, হাসান মুরাদ ও সুশান্ত ত্রিপুরার মতো অভিজ্ঞরা। নতুন মুখ কাজেম শাহ ও শেখ মোরসালিন ও আল-আমিনের সঙ্গে সবচেয়ে বড় ভরসা মোহামেডান থেকে আসা মালিয়ান স্ট্রাইকার সুলেমান দিয়াবাতে।

প্রতিপক্ষ কিরগিজ লিগে দ্বিতীয় স্থানে থাকা শক্তিশালী মুরাস ইউনাইটেড। দলটির স্কোয়াডে রয়েছে ১২ বিদেশি ও কিরগিজ জাতীয় দলের ৪ খেলোয়াড়। আক্রমণে তাদের প্রধান অস্ত্র মাকসাত আলিগুলভ, বেনিনের চারবেল গোমেজ ও আইভরি কোস্টের নামিয়েন ইকপে। দলে সব পজিশনেই কার্যকর খেলোয়াড় থাকায় আবাহনীকে তারা কঠিন চ্যালেঞ্জ জানাতে প্রস্তুত। আবাহনীও দেশের মাটিতে আত্মবিশ্বাসী এবং প্রতিপক্ষ দলটিকে পাল্টা চ্যালেঞ্জ জানাতে তৈরি।

এদিকে রাতে মাঠে নামবে বসুন্ধরা কিংস। কাতারের দোহায় সুহেইম বিন হামাদ স্টেডিয়ামে তাদের প্রতিপক্ষ সিরিয়ান ক্লাব আল কারামাহ। এবারের এএফসি চ্যালেঞ্জ লিগের আগে পুরো দল নিয়ে মাত্র ২ দিন অনুশীলন করেছে বসুন্ধরা কিংস। বিদেশি খেলোয়াড়রা কাতারে যোগ দিলেও নতুন ব্রাজিলিয়ান কোচ সার্জিও ফারিয়াস আসেননি, ইরাকি ক্লাব দুহক তাকে নিয়োগ দিয়েছে। তাই দুই সহকারী কোচ সৈয়দ গোলাম জিলানী ও মাহবুব হোসেন রক্সি দলকে প্রস্তুত করেছেন। এই ম্যাচ দিয়ে কিংসের জার্সিতে অভিষিক্ত হচ্ছেন কিউবা মিচেল। তার সঙ্গে বাংলাদেশের ঘরোয়া ফুটবলে নিয়মিত পারফর্ম করা টনি, রাফায়েল, সানডে ও ডরিয়েলটনের সঙ্গে রাকিব, তারিক, তপুদের মত পুরোনো সৈন্যরা বসুন্ধরা কিংসের বড় ভরসা।

প্রতিপক্ষ সিরিয়ান ক্লাব আল কারামা ইতিহাস ও অভিজ্ঞতায় সমৃদ্ধ। ৯৭ বছরের পুরনো এই ক্লাবের ঘরে সিরিয়ান লিগ ও কাপের ৮টি করে শিরোপা রয়েছে। তারা ২০০৬ এএফসি চ্যাম্পিয়ন্স লিগ ও ২০০৯ এএফসি কাপের ফাইনালে খেলেছে, তবে দুবারই রানার্সআপ হয়েছে। বর্তমানে সিরিয়ান লিগের শীর্ষ পর্যায়ে থাকা দলটিতে জাতীয় দলের কয়েকজন খেলোয়াড় ও ২ বিদেশি রয়েছেন। এএফসির আসরে তাদের রেকর্ড ২৭ ম্যাচে ১৩ জয়, ৭ ড্র ও ৭ হার—যা বসুন্ধরা কিংসের জন্য কঠিন চ্যালেঞ্জের ইঙ্গিত দিচ্ছে।

এএফসি চ্যালেঞ্জ লিগের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় কতটা তৈরি বাংলাদেশের দুই ক্লাব? ঢাকা আবাহনী ও বসুন্ধরা কিংস কি পারবে নিজ নিজ ম্যাচে জয় তুলে নিয়ে গ্রুপ পর্বে জায়গা করে নিতে? নাকি হারের স্বাদ পেয়ে বিদায় নেবে প্লে অফ থেকেই? সব প্রশ্নের উত্তর মিলবে মাঠের ফুটবলেই। তার আগে দুই দলই সমর্থকদের অকুণ্ঠ সমর্থনের প্রত্যাশায়।

Previous articleচ্যালেঞ্জ লিগে মাঠে নামছে বসুন্ধরা কিংস, লক্ষ্য জয়

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here