একটা ম্যাচ, কোটি মানুষের স্বপ্ন। মাঠে খেলছে হামজা-শমিতরা, মাঠের বাইরে স্বপ্নে বিভোর কোটি ফুটবল প্রেমী। কিন্তু দিন শেষে সবাইকে পুড়তে হলো আক্ষেপে। ২ গোলে পিছিয়ে থেকেও সমতায় ফেরা বাংলাদেশ শেষ সেকেন্ডে গোল খেয়ে মাঠ ছাড়লো ৪-৩ গোলের হারে।
ম্যাচের শুরুতেই এগিয়ে যায় বাংলাদেশ। ১৩তম মিনিটে হামজা চৌধুরীর বুলেট গতির ফ্রি কিক প্রতিপক্ষের বাঁধা টপকে জালে জড়িয়ে যায়। উল্লাসে ফেটে পড়ে জাতীয় স্টেডিয়ামের গ্যালারি। ২৬ মিনিটে রাকিব হোসেনের নিখুঁত ক্রসে মাথা ছোঁয়াতে পারেননি ফয়সাল আহমেদ ফাহিম। ৩৯ মিনিটে পাল্টা আক্রমণে সুযোগ পায় হংকং, কিন্তু এভারটনের শট পোস্ট ছুঁয়ে বাইরে চলে যায়।
প্রথমার্ধের যোগ করা সময়েই সমতায় ফেরে অতিথিরা। কর্নার থেকে ফিরে আসা বল বক্সের সামনে পেয়ে আলতো টোকায় গোল করেন এভারটন — যেখানে বাংলাদেশ গোলরক্ষক মিতুল মারমা ছিলেন অসহায়।
দ্বিতীয়ার্ধ শুরু হতেই আসে বড় ধাক্কা। ৫০ মিনিটে জুনিয়র সোহেল রানার গতিহীন ব্যাকপাসে, সুযোগ বুঝে বল কেড়ে নিয়ে রাফায়েল মার্কেস সহজেই গোল করেন। হংকং পেয়ে যায় ২-১ লিড। এরপরই কোচ ক্যাবরেরা একসাথে তিনটি পরিবর্তন আনেন। দুই সোহেল রানা ও ফয়সাল আহমেদ ফাহিমের জায়গায় মাঠে নামেন জামাল ভূঁইয়া, শমিত সোম ও ফাহমিদুল ইসলাম।
৬৮ মিনিটে শেখ মোরসালিনের প্রচেষ্টা লক্ষ্যভ্রষ্ট হলে হতাশা বাড়ে। তারপর ৭৪ মিনিটে এভারটনের দারুণ পাস থেকে রাফায়েল নিজের দ্বিতীয় গোলটি করে ব্যবধান বাড়ান ৩-১ এ। শেষদিকে বদলি হিসেবে মাঠে নামেন যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী জায়ান আহমেদ। তিনি নেমে লেফট উইংয়ে গতি বাড়ান।
অবশেষে ৮৪ মিনিটে ম্যাচে ফেরার সূচনা করে বাংলাদেশ। জামাল ভূঁইয়ার ফ্রি-কিকে হংকংয়ের এক ডিফেন্ডারের হেড থেকে বল এসে পড়ে ফাহামিদুলের পায়ে — তার ভলি গোলরক্ষক ঠিকভাবে ধরতে না পারলে, রিবাউন্ডে মোরসালিন বল জালে পাঠান।
শেষ মুহূর্তে কর্নার থেকে শমিতের হেডে স্কোরলাইন সমতায় আসে ৩-৩। কিন্তু গল্পের শেষটা হয় নাটকীয়ভাবে। ম্যাচের শেষ সেকেন্ডে রাফায়েল মার্কেস হ্যাটট্রিক পূর্ণ করে হংকংকে এনে দেন ৪-৩ গোলের জয়। বাংলাদেশের দুর্দান্ত লড়াইয়ের পরও শেষ মুহূর্তের ভুলে সঙ্গী হয় হতাশার এক হার। এই হারের ক্ষত নিয়েই আগামী ১৪ অক্টোবর হংকংয়ের মাটিতে তাদের মোকাবেলা করবে বাংলাদেশ।