৩০ অক্টোবর থেকে শুরু হয়েছে বাংলাদেশ জাতীয় ফুটবল দলের প্রস্তুতি ক্যাম্প। এএফসি চ্যালেঞ্জ লিগ শেষে ৪ নভেম্বর বসুন্ধরা কিংসের ফুটবলারদের যোগ দেওয়ার কথা থাকলেও তারা এখনো আসেননি। শারীরিক ও মানসিক বিশ্রামের কারণে ক্লাবটি তিন দিন পর ৭ নভেম্বর ১০ জন ফুটবলার ছাড়বে। এদিকে, স্পেনিশ হেড কোচ হ্যাভিয়ের কাবরেরা আজ ঢাকায় এসে অনুশীলন তদারকির দায়িত্ব নিয়েছেন।
নভেম্বর উইন্ডোতেও পূর্ণাঙ্গ স্কোয়াড ছাড়াই অনুশীলন শুরু করেছে জাতীয় দল। এর আগে সেপ্টেম্বর উইন্ডোতে বসুন্ধরা কিংস ফুটবলার ছেড়েছিল দুই সপ্তাহ পর, আর অক্টোবর উইন্ডোতে মোহামেডানও শুরুর দিন খেলোয়াড় দেয়নি।
কোচ ক্যাবরেরা বলেন,
“তারা ৭ তারিখে যোগ দেবে, যেমনটা আপনি জানেন। তাই আমরা তাদের জন্য অপেক্ষা করব এবং প্রস্তুতি চালিয়ে যাব। দেখা যাক, হামজা সম্ভবত ১০ তারিখের মধ্যে চলে আসবে। যদি সব ঠিকঠাক থাকে এবং সে ফিট থাকে, তাহলে কেন নয়, সে খেলবে। শমিত হয়তো একটু দেরিতে আসবে, কিন্তু আমরা চেষ্টা করব অন্তত নেপালের বিপক্ষে কিছু সময়ের জন্য তাকে খেলানোর।”
জুন থেকে নভেম্বর পর্যন্ত ঘুরেফিরে প্রায় একই ২৮–৩০ জন খেলোয়াড়কেই ডাকছেন ক্যাবরেরা । একই বৃত্তে খেলোয়াড় রাখার কারণ ব্যাখ্যা করে তিনি বলেন,
“তিনটি উইন্ডো একে অপরের কাছাকাছি সময়ে। আমরা সবসময় একইভাবে কাজ করি, একই ধরণের পরিকল্পনা নিয়ে প্রস্তুতি নিই। তাই একই স্কোয়াডকে ধরে রাখা স্বাভাবিক।”
এরপর ঘরোয়া ফুটবলের সূচি নিয়ে প্রশ্ন তোলেন ক্যাবরেরা,
“আমাদের দেশে এখন নিয়মিত ঘরোয়া লিগ হচ্ছে না। ফলে নতুন খেলোয়াড়দের পারফরম্যান্স দেখার সুযোগ কম। তাই গত তিন মাসে দলে প্রায় ৯০-৯৫% খেলোয়াড় একই রয়ে গেছে। তবে এটা ইতিবাচক দিকও বটে — দল ভালো খেলছে, যদিও প্রত্যাশিত ফল পাইনি, কিন্তু আমরা সবসময় কাছাকাছি অবস্থায় ছিলাম।”
জাতীয় দলের ক্যাম্পের সূচি কোচের চাহিদা অনুযায়ী নির্ধারণ করে ফেডারেশন। কিন্তু প্রায়ই দেখা যায়, ক্লাবগুলো শুরুতে ফুটবলার ছাড়ে না, ফলে পূর্ণ অনুশীলন সম্ভব হয় না। তবু আগেভাগে ক্যাম্প ডাকার ব্যাখ্যা দিয়ে ক্যাবরেরা বলেন,
“ক্লাবগুলো অনেক সময় তাদের এক-দুই সপ্তাহ বিশ্রাম দেয়। কিন্তু যদি আমরা সেই সময়টা দিই, তাহলে তাদের ফিটনেস ও পারফরম্যান্স কমে যাবে, যা ভারত বা নেপালের বিপক্ষে ম্যাচে আমাদের ক্ষতি করবে। তাই আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি, লিগ শেষ হওয়ার পর ৪–৫ দিনের মধ্যেই খেলোয়াড়দের ক্যাম্পে এনে অনুশীলন চালিয়ে যাওয়া সবচেয়ে ভালো। জাতীয় দলের সঙ্গে থাকলেই তারা ফিট থাকবে — এই বিশ্বাস থেকেই আমরা কাজ করছি।”
সম্প্রতি আলোচনায় থাকা ইংল্যান্ড প্রবাসী ফুটবলার কিউবা মিচেল সম্পর্কে ক্যাবরেরা বলেন,
“কিউবা একজন প্রতিভাবান খেলোয়াড়। আমি নিশ্চিত, ভবিষ্যতে সে জাতীয় দলে সুযোগ পাবে। তবে এখনই নয়, কারণ এই মুহূর্তে অন্য খেলোয়াড়রা বেশি ভালো পারফর্ম করছে। তবে আমি নিশ্চিত, কিউবা ভবিষ্যতে কিংসের হয়ে আরও সময় পেলে এবং ভালো খেললে, তাকে অবশ্যই জাতীয় দলে দেখা যাবে।”
সম্প্রতি যমজ সন্তানের পিতা হয়েছেন ক্যাবরেরা। সাংবাদিকদের মিষ্টি খাওয়ানোর দিন জানতে চাইলে তিনি হাসিমুখে জবাব দেন,
“ভারতের বিপক্ষে জয়ের পর আপনাদের আমন্ত্রণ জানাবো, অবশ্যই। হ্যাঁ, মিষ্টি থাকবে!”




