হামজা চৌধুরী ও শমিত শোমের আগমনের পর বাংলাদেশের ফুটবলপ্রেমীদের বড় স্বপ্ন ছিল— এশিয়ান কাপে তাদের মাঠে দেখা যাবে। কিন্তু বাছাইপর্বের আগেই সেই স্বপ্ন গুঁড়েবালি। ব্যর্থতার দায়ে এখন কাঠগড়ায় জাতীয় দলের হেড কোচ হ্যাভিয়ের ক্যাবরেরা। নেপাল ম্যাচের আগের দিন সংবাদ সম্মেলনে তাই উঠল তার মেয়াদ ও যোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন।

সংবাদ সম্মেলনের একেবারে শেষদিকে অধিনায়ক জামাল ভূঁইয়াকে করা হয় স্পর্শকাতর প্রশ্ন— হামজা-শমিতের আগমনের পর কোচ পরিবর্তনের প্রয়োজন আছে কি না? প্রশ্নটি বাংলায় করা হলেও কোচ ক্যাবরেরা কিছুটা বুঝতে পারেন; মাথা নিচু করে গম্ভীর মুখে বসে থাকেন। পরিস্থিতি সামলে জামাল বলেন,

‘​আসলে এটা আমার সিদ্ধান্ত না। এটা ম্যানেজমেন্টের সিদ্ধান্ত, যারা বাফুফেতে, ওদের সিদ্ধান্ত। আমি খেলোয়াড়, আমি খেলোয়াড়ের মতো থাকবো। অনেক ধন্যবাদ। আপনারা চেষ্টা করছেন।’

সমর্থকদের একাংশ ইতোমধ্যেই কোচ ক্যাবরেরাকে বয়কটের ডাক দিয়েছেন। অনেকেই ঘোষণা দিয়েছেন, তার অধীনে বাংলাদেশ দলের ম্যাচ স্টেডিয়ামে গিয়ে দেখবেন না। এ নিয়ে ক্যাবরেরা বলেন,

‘সমালোচনা থাকা স্বাভাবিক, আমি তা মেনে নিচ্ছি— এটাই আমার অবস্থান। কিন্তু আমি বিশ্বাস করি, সবাই দলটার পাশে আছে।’

ক্যাবরেরার চুক্তির মেয়াদ আগামী বছর মার্চ পর্যন্ত। এশিয়া কাপ বাছাইয়ে ব্যর্থতার পর তার বাংলাদেশের অধ্যায় কার্যত শেষের পথে। ১৮ নভেম্বর ভারতের বিপক্ষে ম্যাচই হতে পারে তার শেষ পরীক্ষা। চুক্তির ভবিষ্যৎ নিয়ে প্রশ্ন উঠলেও তিনি বিষয়টি পরবর্তী সময়ের ওপর ছেড়েছেন।

ভারত ম্যাচের টিকিট বিক্রি শুরু হতেই মিনিট পাঁচেকের মধ্যে শেষ হয়ে যায়। কিন্তু হামজা-শমিতকে নিয়ে প্রচারণা চললেও নেপাল ম্যাচে তেমন সাড়া নেই দর্শকদের। এ প্রসঙ্গে জামাল ভূঁইয়া বলেন,

‘ওরা (ফেডারেশন) ছোট একটা ভিডিও চাইছে। তো অন্য ম্যাচে তো দেখা যায়নি। না, বাট অন্য ম্যাচ তো সোল্ড আউট ছিল, সম্ভবত সেই কারণে ওরা ভিডিও দেয়নি।’

কানাডা থেকে মঙ্গলবার রাতে ঢাকায় পৌঁছে বুধবার অনুশীলনে যোগ দিয়েছেন শমিত সোম। তবে চোটের কারণে অনুশীলনে ছিলেন না শেখ মোরসালিন। কোচ ক্যাবরেরা জানান,

‘সবাই মোটামুটি ফিট। শুধু মোরসালিনের সামান্য মাংসপেশীতে অস্বস্তি আছে, কাল চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবো।’

নেপালের অনেক ফুটবলারই বর্তমানে বাংলাদেশ লিগে খেলছেন। তাই তাদের ভালোভাবেই চেনেন জামাল ভূঁইয়া,

‘আমার ক্লাবে (ব্রাদার্স ইউনিয়ন) তো চারজন আছে। আমি ওদের সঙ্গে খেলি, তাই জানাশোনা ভালো। কিন্তু আমরা ওদের খাটো করে দেখি না। আমরা জানি, নেপাল শক্তিশালী ও কঠিন দল।’

সাম্প্রতিক সময়ে ইনজুরির সময়গুলোতে গোল হজম করে ম্যাচ হেরেছে বাংলাদেশ। সেই দায় নিজের কাঁধে নিলেন অধিনায়ক,

‘এখন তো ম্যাচ শুধু ৯০ মিনিটের নয়, ৯৫–৯৮ মিনিট পর্যন্ত হয়। খেলোয়াড়দের শেষ পর্যন্ত ফোকাস রাখতে হবে। এটা আমার নিজের দোষ।’

২০২০ সালের নভেম্বরে ঢাকায় নেপালকে হারিয়েছিল বাংলাদেশ। সেই জয়ের ধারায় ফিরতে চান কোচ ক্যাবরেরা,

‘কালকের ম্যাচও আমরা একই মানসিকতা নিয়ে খেলব, যেমন ভারতের বিপক্ষে খেলতে চাই। এই ম্যাচটা আমাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। আমরা জয়ের ধারায় ফিরতে চাই।’

Previous articleহামজার অনুশীলনে নতুন উদ্দীপনা, শমিত যোগ দেবেন বুধবার
Next articleএকাদশে নেই শমিত, আছেন জায়ান-সাদ

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here