আবারও সেই পুরোনো গল্প—শেষ মুহূর্তে গোল হজম করে জয়ের স্বপ্ন ভাঙল বাংলাদেশের। বৃহস্পতিবার নেপালের বিপক্ষে প্রীতি ম্যাচে ২-২ ড্র করে মাঠ ছাড়তে হয়েছে জামাল ভূঁইয়াদের। ম্যাচের অন্তিম সময়ে গোল হজম করায় আবারও সমালোচনার মুখে পড়েছেন বাংলাদেশ কোচ হ্যাভিয়ের ক্যাবরেরা।
ম্যাচ পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে ক্যাবরেরাকে ডিফেন্সের দুর্বলতা নিয়ে একের পর এক প্রশ্নের মুখে পড়তে হয়। হংকংয়ের বিপক্ষে যেমন ডিফেন্ডারদের ভুলে গোল হজম হয়েছিল, নেপাল ম্যাচেও সেই একই চিত্র। ক্যাবরেরার ব্যাখ্যা, ‘আমি শতবার অনুশীলন করিয়েছি। এটা ফুটবলে হতে পারে। কিন্তু এটা বারবারই হচ্ছে, যা হতাশাজনক।’

গতকাল ম্যাচের আগের দিন অধিনায়ক জামাল ভূঁইয়া বলেছিলেন, দলের খেলোয়াড়রা শেষ মুহূর্তে মনোযোগ হারিয়ে ফেলে। এই মানসিক দুর্বলতার বিষয়ে কোচের মন্তব্য ছিল সতর্ক, ‘আমি বলব না এটা মানসিক সমস্যা। আমরা ভিডিও বিশ্লেষণ করব, ভুলগুলো সংশোধন করব এবং এখন যে চার দিন সময় আছে, ভারতের বিপক্ষে যেন এমন না হয়, সেই প্রস্তুতি নেব।’
বাংলাদেশের দুই গোলের একটি এসেছে হামজা চৌধুরীর দুর্দান্ত নৈপুণ্যে, আরেকটি পেনাল্টি থেকে। তবে এ ছাড়া খুব বেশি গোলের সুযোগ তৈরি করতে পারেনি দলটি। বিষয়টি স্বীকার করেই ক্যাবরেরা বলেন, ‘প্রথমার্ধে আমরা বল দখলে এগিয়ে ছিলাম। কিন্তু স্পষ্টত গোলের সুযোগ তৈরি করতে পারিনি। দায় আমারই, আমরা আরও ভালো খেলতে পারতাম। বিশেষ করে প্রথমার্ধে। নেপালের মতো লো ব্লক দলের বিপক্ষে খেলা সহজ নয়।’

ম্যাচে হামজা চৌধুরী ও জায়ান আহমেদ দুজনেই হালকা চোট পান এবং মাঠ ছাড়ার পর তাদের পায়ে আইস ব্যাগ দেখা যায়। এতে সমর্থকদের মনে শঙ্কা জেগেছিল ভারত ম্যাচে তারা খেলতে পারবেন কি না। কোচ অবশ্য সেই আশঙ্কা উড়িয়ে দেন, ‘তাদের আঘাত গুরুতর কিছু নয়। ভারত ম্যাচে তারা খেলবে।’
নেপালের একাদশে থাকা পাঁচ ফুটবলারই বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের ক্লাবগুলোতে খেলেন। ফর্টিজের অনন্ত তামাং শেষ মুহূর্তে গোল করে বাংলাদেশের জয় কেড়ে নেন। এ বিষয়ে ক্যাবরেরা বলেন, ‘আমি এটা সমস্যা মনে করি না। আমরা জয়ের লক্ষ্যেই নেমেছিলাম, কিন্তু জিততে পারিনি—এটাই বাস্তবতা। তবে খুব নেতিবাচক হলে চলবে না। এখন আমাদের মনোযোগ ভারতের বিপক্ষে ম্যাচে।’

বাংলাদেশ প্রথমার্ধে ১-০ গোলে পিছিয়ে ছিল। হামজার জোড়া গোলে বাংলাদেশ খেলায় লিড নেয়। ৮০ মিনিটে হামজাকে উঠিয়ে নেন কোচ হ্যাভিয়ের ক্যাবরেরা। তাকে উঠিয়ে নেওয়ার ফায়দা লুটেছে নেপাল। এমনটাই বললেন কোচ হড়ি খাড়কা, ‘হামজা পুরো ম্যাচ (বাকি সময়) আক্রমণভাগে থাকলে আমাদের জন্য কষ্ট হতো। সে না থাকায় আমাদের সুবিধা হয়েছে।’
দ্বিতীয়ার্ধের প্রথম পাঁচ মিনিটে হামজা ম্যাজিকে বাংলাদেশ ২-১ গোলের লিড পায়। দর্শনীয় বাইসাইকেল কিকে গোলের পর পেনাল্টি থেকে জাল কাঁপান তিনি। প্রথম গোলে ইংল্যান্ড প্রবাসী মিডফিল্ডারকে কৃতিত্ব দিলেও দ্বিতীয় গোল নিয়ে আপত্তি রয়েছে নেপাল কোচের, ‘প্রথম গোলটি অত্যন্ত অসাধারণ হয়েছে। তবে দ্বিতীয় গোলের পেনাল্টি নিয়ে আমার প্রশ্ন রয়েছে। এটা আমার দৃষ্টিতে পেনাল্টি হয়নি।’
বাংলাদেশের হোম ম্যাচ। দুই সপ্তাহের বেশি অনুশীলন করেছে তারা। সেখানে নেপালের প্রস্তুতি যৎসামান্য। এরপরও তারা বাংলাদেশকে জিততে দেয়নি। তাই সন্তুষ্ট হড়ি খাড়কা, ‘দ্বিতীয়ার্ধে আমরা পরিকল্পনা অনুযায়ী খেলেছি। এই ড্র আমাদের এশিয়ান কাপ বাছাইয়ের ম্যাচের জন্য কাজে দেবে।’




