ত্রিদেশীয় সিরিজে প্রথমবারের মতো কোনো ইউরোপীয়ান দলের মুখোমুখি হলো বাংলাদেশ। জাতীয় স্টেডিয়ামে আজারবাইজানের বিপক্ষে ম্যাচটি ছিল তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতায় ভরা। র‍্যাংকিংয়ে ত্রিশ ধাপ পিছিয়ে থেকেও বাংলাদেশ বেশিরভাগ সময়ই সমান তালে খেলেছে। শেষ দিকে ডিফেন্সে মনোযোগ হারানো আর বক্সে সহজ ভুলই ফল বদলে দিয়েছে। ম্যাচে সফরকারী আজারবাইজান ২-১ গোলে জিতেছে এবং সিরিজে টানা দুই ম্যাচেই জয় নিয়েই ফিরছে।

বাংলাদেশ দ্বিতীয় ম্যাচেও হারের স্বাদ পেল। আগের ম্যাচে মালয়েশিয়ার কাছে ০-১ গোলে হেরেছিল লাল-সবুজরা। আজও একই গল্প—গোল করার পর খেলায় ফেরার উচ্ছ্বাস টিকেছিল খুব বেশি সময় নয়।

আজারবাইজান শুরুতেই বাংলাদেশকে চাপে রাখে। ২০ মিনিটে বানিয়া ইশরাকের ক্রসে দারুণ ফিনিশ করেন অধিনায়ক জাফরজেদা। গোল করেই আবেগে ভেঙে পড়েন তিনি। সতীর্থদের সঙ্গে একটি সাদা কাপড়ে কারও ছবিকে সামনে রেখে উদযাপন করেন, তারপর কান্নায় ভেঙে পড়েন কয়েক মিনিট।

১৪ মিনিট পরই ম্যাচে ফেরে বাংলাদেশ। স্বপ্না রাণীর কর্নার থেকে তৈরি হওয়া সুযোগ কাজে লাগান মারিয়া মান্ডা। কয়েক ধাপ ঘুরে আসা বলটি বাম পায়ে দুর্দান্ত সাইড ভলিতে জালে জড়ান তিনি। ডিফেন্ডার লাফিয়ে উঠেও বল ঠেকাতে পারেননি। গোলরক্ষক ও ডিফেন্ডারের মাঝ দিয়ে বল ঢুকে যায়।

বাংলাদেশ দ্বিতীয়ার্ধে আক্রমণ বাড়ালেও শেষ পর্যন্ত ডিফেন্সের ভুলই কাল হলো। পুরো অর্ধে বল বেশি ছিল আজারবাইজানের নিয়ন্ত্রণে। রুপ্না চাকমা কয়েকবার বল ধরায় অনিশ্চয়তা দেখালেও বড় বিপদ হয়নি। তবে ৮৪ মিনিটে আরেকটি ক্রস থেকে মানিয়া ইশরা বক্সে জায়গা পেয়ে সহজেই প্লেসিং শটে গোল করেন। শামসুন্নাহার তাকে ঠিকমতো ট্র্যাক করতে পারেননি, আর অন্য ডিফেন্ডাররাও ক্রস ক্লিয়ার করতে ব্যর্থ হন।

এ অর্ধে বাংলাদেশ কয়েকবার প্রতি আক্রমণে সুযোগ তৈরি করেছিল। রুপ্না চাকমা বাঁ প্রান্ত থেকে দৌড়ে বক্সে ঢোকার চেষ্টা করেছেন, কিন্তু শেষ ছোঁয়ায় ব্যর্থ হয়েছেন। ৬৫ মিনিটে তার ক্রসে মনিকা বল ছোঁয়াতে পারেননি। পিটার বাটলার তিনটি পরিবর্তন এনেও ফল বদলাতে পারেননি।

গত ম্যাচের মতো এবারও হাই লাইন ডিফেন্সে খেলেছে আফিদারা। কয়েকবার আজারবাইজান সেই লাইন ভেঙে ঢুকে পড়লেও পরে অফসাইডে ধরা পড়েছে বা কাভার করে ঠেকিয়েছে বাংলাদেশ।

মহিলা ফুটবলে দর্শকের উপস্থিতি বাড়ছে। মালয়েশিয়ার বিপক্ষে সব গ্যালারি খোলা ছিল। আজ কেবল পূর্ব গ্যালারি খোলা থাকলেও প্রায় সাত হাজারের মতো সমর্থক উপস্থিত ছিলেন। বাদ্যযন্ত্রে স্টেডিয়াম ছিল সরগরম।

শেষ পর্যন্ত কঠিন লড়াই করেও পয়েন্ট পেল না বাংলাদেশ। তবুও ইউরোপীয়ান প্রতিপক্ষের বিপক্ষে এই ম্যাচ লাল-সবুজদের আত্মবিশ্বাস বাড়াবে।

Previous articleশেষ মুহূর্তের গোলে ড্র নিয়ে বাঁচল মোহামেডান

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here