রাত পোহালেই শুরু হচ্ছে নারী ফুটবল লিগ। এশিয়া কাপ সামনে রেখে এই লিগ জাতীয় দলের প্রস্তুতির গুরুত্বপূর্ণ মঞ্চ হওয়ার কথা। কিন্তু লিগের মান, প্রতিদ্বন্দ্বিতার ঘাটতি এবং সাফ নারী ক্লাব চ্যাম্পিয়নশিপে খেলতে না দেওয়ার সিদ্ধান্ত মিলিয়ে কোচ পিটার বাটলার ও বাফুফের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন বাড়ছে।
১১ দলের এবারের নারী ফুটবল লিগে হাতে গোনা কয়েকটি দল ছাড়া বাকিগুলো গড়পড়তা। আগের মৌসুমগুলোতে তাই অনেক ম্যাচেই দেখা গেছে গোলবন্যা। এমন বাস্তবতায় এশিয়া কাপের আগে ঋতুপর্ণা-আফিদারা কতটা প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ ম্যাচ খেলতে পারবেন, সেটিই বড় শঙ্কা।
৫ ডিসেম্বর শুরু হওয়া সাফ নারী ক্লাব চ্যাম্পিয়নশিপে বাংলাদেশের ক্লাব নাসরিন স্পোর্টিং জাতীয় দলের ফুটবলারদের নিয়ে খেলতে চেয়েছিল। কিন্তু জাতীয় দলের ব্রিটিশ কোচ পিটার বাটলার ও বাফুফে সেই ছাড় দেয়নি। যুক্তি হিসেবে তুলে ধরা হয় এশিয়া কাপের প্রস্তুতি ও টুর্নামেন্টের মান। যদিও ওই টুর্নামেন্টে ভারত, পাকিস্তান, নেপাল ও ভুটানের খেলোয়াড়রা অংশ নিয়েছিলেন।
অথচ মাত্র তিন সপ্তাহ পরই ঘরোয়া লিগের জন্য জাতীয় দলের ফুটবলারদের উন্মুক্ত করা হয়েছে। এই দ্বৈত অবস্থান নিয়ে প্রশ্নের জবাবে বাফুফে নারী উইংয়ের প্রধান মাহফুজা আক্তার কিরণ বলেন, “এই প্রশ্ন বাটলারকেই করা উচিত।”
সাফ ক্লাব চ্যাম্পিয়নশিপে নাসরিন স্পোর্টিং চ্যাম্পিয়ন হলে সেটি বাংলাদেশেরই অর্জন হতো। একই সঙ্গে জাতীয় দলের ফুটবলারদের জন্যও এটি প্রস্তুতির সুযোগ হতে পারত। এ প্রসঙ্গে কিরণ বলেন, “ওখানে খেলোয়াড় ছাড়া হলে দল চ্যাম্পিয়ন হয়ে আসত। দেশের সম্মানও বাড়ত। আমি এ নিয়ে অনেক কথাই বলেছি। পিটার ছাড়াও আরও কিছু ইস্যু ছিল, যেগুলো এখন বলছি না।”
ত্রিদেশীয় সিরিজের পরপরই হওয়া সাফ ক্লাব চ্যাম্পিয়নশিপে খেলতে না দেওয়ার বিষয়ে কিরণ জানান, বাটলারের অবস্থান ছিল স্পষ্ট। “তার কথা ছিল, অন্য কোনো কোচের অধীনে খেলতে দেবে না।”
কিন্তু প্রশ্ন হলো, সাফ ক্লাব কাপে অন্য কোচের অধীনে খেলতে দেওয়া হয়নি, অথচ তিন সপ্তাহ পরেই ঘরোয়া লিগে সেই একই খেলোয়াড়রা অন্য কোচদের অধীনে খেলছেন। যেখানে সব দলে সমমানের কোচ বা সুযোগ-সুবিধা নেই। সেপ্টেম্বরে থাইল্যান্ডের বিপক্ষে ম্যাচে ভুটান লিগে খেলা কয়েকজন ফুটবলারের ফিটনেস ঘাটতিও চোখে পড়েছিল।
মার্চে এশিয়া কাপের মাত্র এক মাস আগে ঘরোয়া লিগ শেষ হবে। ফলে ফিটনেস ও পারফরম্যান্স নিয়ে শঙ্কা থেকেই যাচ্ছে। এ নিয়ে কিরণ বলেন, “এখন তো পিটারকে জিজ্ঞেস করবই। অন্য কোচের অধীনে এখন খেলতে গেলে, আগে দেওয়া হয়নি কেন?”
পিটার বাটলার ২০ ডিসেম্বর বড়দিনের ছুটিতে ইংল্যান্ড গেছেন। তার ফেরার কথা ৪ জানুয়ারি। কোচ হিসেবে পরিকল্পনা দেওয়া বাটলারের দায়িত্ব হলেও, নিয়োগকারী সংস্থা হিসেবে সেই পরিকল্পনার ব্যাখ্যা ও যৌক্তিকতা নিশ্চিত করার দায় বাফুফের। সাম্প্রতিক দুই ঘটনায় বাটলারের দুই রকম অবস্থান নিয়ে যথাযথ জবাবদিহি ও তদারকি হচ্ছে কি না, সেটাই এখন ফুটবলাঙ্গনের বড় প্রশ্ন।




