গেল কয়েকদিনে অনুশীলন বয়কট, বিদ্রোহ, গণ অবসরের হুমকি ইত্যাদি কারণে উত্তাল ছিল বাংলাদেশের নারী ফুটবল। তবে অবশেষে আজ সমাধানে এসেছে বিদ্রোহীরা। বাফুফের নারী উইংয়ের চেয়ারম্যান মাহফুজা আক্তার কিরণ জানিয়েছেন বিদ্রোহ করা ফুটবলাররা অনুশীলনে ফিরতে রাজি হয়েছেন।
তবে আপাতত তারা ছুটিতে যাবেন, নারীরা আরব আমিরাত সফর শেষে দেশে ফিরলে আবার ক্যাম্প শুরু হলে তখন যোগ দেবেন তারা। এ বিষয়ে কিরণ বলেন,
“সভাপতি ও আমার পক্ষ থেকে মেয়েদের ফিরিয়ে আনার চেষ্টা অব্যাহত রেখেছিলাম। ধারাবাহিকভাবে চেষ্টা করেছি আমরা। আজকেও তাদের সাথে বসেছিলাম আমি। আজকে বসার পরে আমি যেটা বলতে পারি, মেয়েরা ফিরবে, ট্রেনিংয়ে ফিরবে; কিন্তু এখন ফিরবে না। কেননা, আমাদের ক্যাম্প বন্ধ হয়ে যাবে ২৪ ফেব্রুয়ারি, যেহেতু আমরা আরব আমিরাতে যাব দুইটা ম্যাচ খেলার জন্য।”
মেয়েদের দল আরব আমিরাত সফরে বিদ্রোহ করা খেলোয়াড়দের ছাড়াই যাবে। তবে দল দেশে ফিরলে দলের সঙ্গে যোগ দেবেন তারা – এমনটাই জানান কিরণ,
“দল চলে যাবে সংযুক্ত আরব আমিরাতে। ফলে ক্যাম্প বন্ধ হবে। ক্যাম্প বন্ধ মানে পুরোটাই বন্ধ। সিনিয়র মেয়েরাও একটা ব্রেক চাচ্ছে, এই সুযোগে তারা একটা ব্রেক পাবে, এরপর ফিরে তারা অনুশীলন শুরু করবে। ওরা যখন অনুশীলন শুরু করবে, তার আগে আমরা যেটা করব, আমরা ও বাফুফের সর্বোচ্চ কর্তৃপক্ষ, সভাপতি মেয়েদের, কোচ-সবার সাথে বসে তাদের মধ্যে যে ভুল বোঝাবুঝি হয়েছে, সেটা মিটিয়ে দেওয়া হবে।”
ইংলিশ কোচ পিটার বাটলারের বিরুদ্ধে বডি শেমিং ও মানসিক নির্যাতনের অভিযোগে তোলে গণ অবসরের হুমকি দিয়েছিল বিদ্রোহীরা। তবে কিরণ জানালেন সেগুলো ছিল ভুল বোঝাবুঝি। সেগুলোর অবসান হয়ে গেছে বলে উল্লেখ করে তিনি জানান,
“তারা বুঝতে পেরেছে যে, ভুল বোঝাবুঝি ছিল। তো সেখান থেকে তারা বেরিয়ে আসছে। তারা একসাথে অনুশীলন করবে, ক্যাম্পে থাকবে, যদি তাদের মধ্যে ভুল বোঝাবুঝি এবং অসন্তোষ থাকে, তাহলে তো কাজগুলো ঠিক ভালোভাবে হবে না। এজন্য দুই পক্ষের সাথে একসাথে বসে সেগুলো সমাধান করা হবে। মেয়েরা আমাকে বলেছে ফিরে এসে তারা অনুশীলন করবে, চুক্তি স্বাক্ষর করবে। এটা আমাদের জন্য ইতিবাচক।”
কোচ পিটার বাটলারও গণমাধ্যমে বলেছিলেন বিদ্রোহীরা থাকলে তিনি দায়িত্ব ছাড়বেন। তবে কিরণ জানান এ বিষয়ে এখনো কোচের সাথে আলোচনা হয়নি তার। আরব আমিরাত থেকে ফিরলে দুই পক্ষকে নিয়ে আলোচনা করে ভুল বোঝাবুঝি মিটিয়ে দেওয়ার কথাও জানান তিনি। তাই গেল কয়েকদিনের অস্থিরতা শেষে যে নারী ফুটবলে আবারো স্বস্তির পরশ বইতে যাচ্ছে সেটা বলাই যায়। এবার দেখার বিষয় দুই পক্ষের মধ্যে চলমান এই অস্থিরতা কত দ্রুত নিঃশেষ হয়।