প্রতিষ্ঠার সময়কার হিসেবে বাংলাদেশের ফুটবলে বেশ পুরনো ক্লাব উত্তর বারিধারা। তবে ভালো পারফরমেন্সের অভাবে তেমন একটা স্পট লাইট টানতে পারেনি ক্লাবটি। অধিকাংশ সময় নিচের স্তরের লিগেই কাটিয়েছে উত্তর বারিধারা। বাংলাদেশ চ্যাম্পিয়নশিপ লিগের ২০১৫-১৬ মৌসুমের শিরোপা জয়ের পাশাপাশি ২০১২, ২০১৩ ও ২০১৮-১৯ মৌসুমে রানার্স আপ হওয়া উত্তর বারিধারার ক্লাব ইতিহাসে একমাত্র সাফল্য। তবে তরুণ প্রতিভাবান ফুটবলার খুঁজে বের করার জন্য ধন্যবাদ পেতেই পারে উত্তর বারিধারা।

বাংলাদেশ চ্যাম্পিয়নশিপ লিগের ২০১৩ মৌসুমে রানার্স আপ হয়ে প্রথমবারের মতো বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে উত্তীর্ণ হলেও এক মৌসুম পরই আবার রেলিগেটেড হয় ক্লাবটি। এরপর আবার ২০১৫-১৬ মৌসুমের বাংলাদেশ চ্যাম্পিয়নশিপ লিগে চ্যাম্পিয়ন হয়ে বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে ফিরে আসে উত্তর বারিধারা। তবে এবারও এক মৌসুম খেলেই আবারো রেলিগেশন এড়াতে ব্যার্থ হয় ক্লাবটি। এরপর আবার ২ মৌসুম পর ২০১৮-১৯ মৌসুমের বাংলাদেশ চ্যাম্পিয়নশিপ লিগে রানার্স আপ হয়ে পুনরায় বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে ফেরে উত্তর বারিধারা। এরপর থেকে অবশ্য এখন পর্যন্ত টানা বাংলাদেশের ফুটবলের সর্বোচ্চ স্তরে খেলে যাচ্ছে ক্লাবটি। গত মৌসুমে বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে ২৪ ম্যাচে ১৯ পয়েন্ট নিয়ে ১১তম স্থানে থেকে লিগ শেষ করেছিল উত্তর বারিধারা। এবারের নতুন মৌসুমের প্রথম টুর্নামেন্ট স্বাধীনতা কাপে গ্রুপ পর্ব থেকেই বিদায় নেয় বারিধারা। মৌসুমের দ্বিতীয় টুর্নামেন্ট ফেডারেশন কাপে মাঠ নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করে টুর্নামেন্ট থেকে নাম প্রত্যাহার করায় মুক্তিযোদ্ধা সংসদ ক্রীড়া চক্র ও বসুন্ধরা কিংসের সাথে উত্তর বারিধারাও পরবর্তী মৌসুমের ফেডারেশন কাপ থেকে নিষিদ্ধ হয়। এছাড়াও এই তিন ক্লাবকে ৫ লাখ টাকা জরিমানাও গুনতে হয়।

বাংলাদেশ চ্যাম্পিয়নশিপ লিগে ভালো দল গড়ে চ্যাম্পিয়ন হয়ে বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে আসলেও দেশের ফুটবলের সর্বোচ্চ স্তরে যেনো কোনো ভাবে টিকে থাকতে পারলেই খুশি উত্তর বারিধারা। কেননা তাদের দল গঠন সেটাই প্রমাণ করে। এবারের মৌসুমের জন্যই তেমন একটা শক্তিশালী দল গড়তে পারেনি বা গড়েনি উত্তর বারিধারা ক্লাব কর্তৃপক্ষ। বিদেশি কোটায় আগের মৌসুমে উত্তর বারিধারার হয়ে খেলা ৩ বিদেশি ফুটবলারকে এই মৌসুমেও দলে রেখেছে ক্লাবটি। দুই উজবেক ফুটবলার ফজিলভ ও কচনেভের সাথে মিশরীয় ফুটবলার মোস্তফা আব্দুল খালেক এবারও রয়েছেন উত্তর বারিধারায়। তাদের সাথে যুক্ত হয়েছেন আরেক মিশরীয় ফুটবলার সাইদ আব্দুল রহিম। যিনি ‘রামোস মাহমুদ’ নামেই অধিক পরিচিত। এর আগেও উত্তর বারিধারাতে খেলে গিয়েছিলেন এই ডিফেন্ডার। আর দেশীয় কোটায় বড় নামের তেমন কাউকে দলে ভেড়াতে পারেনি বারিধারা। উল্টো গত মৌসুমে উত্তর বারিধারাকে নেতৃত্ব দেওয়ার পাশাপাশি দেশীয় ফুটবলার হিসেবে সর্বোচ্চ ১০ গোল করা ফরোয়ার্ড সুমন রেজাকেও হারিয়েছে ক্লাবটি। এই মৌসুমে বসুন্ধরা কিংসে যোগ দিয়েছেন জাতীয় দলের এই ফরোয়ার্ড।

তাইতো নতুন মৌসুমে ফুটবল প্রেমীদের আগ্রহের জায়গায় হয়তো যেতে পারছে না উত্তর বারিধারা। এবারের মৌসুমেও হয়তো কোনো রকম ভাবে রেলিগেশন এড়িয়ে লিগ শেষ করাই ক্লাবটির মূল লক্ষ্য। তবে উত্তর বারিধারার হেড কোচ সোহেল রহমানের হাত ধরে নতুন কোনো সুমন রেজা বের হয়ে আসে কিনা সেদিকেও নজর রাখতে হবে। আর বড় দলগুলোর পয়েন্ট কেড়ে নিয়ে অঘটন ঘটাতে নিশ্চিতভাবেই প্রস্তুত থাকবে উত্তর বারিধারা। দেখা যাক মৌসুম শেষে কোন অবস্থানে থাকে ‘২৭ বছরের পুরনো’ ক্লাবটি।

Previous articleইন্দোনেশিয়ায় প্রীতি ম্যাচ বাতিল করলো বাফুফে!
Next articleতবে কি হারিয়েই যাবে মুক্তিযোদ্ধা সংসদ ক্রীড়া চক্র?

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here