ছুটেই চলেছে বসুন্ধরা কিংসের জয়রথ। স্বাধীনতা কাপে নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচে বাংলাদেশ পুলিশ এফসির বিপক্ষে ১-০ গোলের জয়ে কোয়ার্টার ফাইনাল নিশ্চিত করেছে অস্কার ব্রুজনের দল। বাংলাদেশ পুলিশের বিপক্ষে শুরুতেই এগিয়ে গেলেও পুরো ম্যাচে পুলিশের রক্ষণভাগ আর ভাঙতে পারেনি কিংস। ম্যাচে ফেরার সুযোগ পেয়েছিল পুলিশও কিন্তু ক্রসবারের বাধায় আর ফেরা হয়নি। ফলে টানা দুই জয়ে শেষ আট নিশ্চিত করলো বসুন্ধরা কিংস।

শুক্রবার কমলাপুরের বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ সিপাহী মোস্তফা কামাল স্টেডিয়ামে স্বাধীনতা কাপে ডি গ্রুপের ম্যাচে গত ম্যাচের অপরিবর্তিত একাদশ নিয়ে মাঠে নামে বসুন্ধরা কিংস। নিজেদের স্বভাবজাত ফুটবল না খেলতে পারলেও ঠিকই জয় নিয়ে মাঠ ছেড়েছে কিংসরা। কিংসের হয়ে প্রথমার্ধে পেনাল্টি থেকে জয়সূচক গোলটি করেন ব্রাজিলিয়ান ফরোয়ার্ড রবসন রবিনহো। এর আগে আরেক ব্রাজিলিয়ান জোনাথনকে বক্সের ভেতর ফাউল করে বসুন্ধরা কিংসকে পেনাল্টি উপহার দেন পুলিশের ডিফেন্ডার ঈসা ফয়সাল।প্রথমার্ধে পেনাল্টি থেকে এগিয়ে যাওয়ার পর ফরোয়ার্ডদের মধ্যে সমন্বয়হীনতায় আর গোলের দেখা পায়নি বর্তমান চ্যাম্পিয়নরা।

ম্যাচের ৩১তম মিনিটে প্রথম বারের মত কিংসের রক্ষণভাগকে চাপে ফেলে পুলিশ এফসি। বা দিক থেকে আক্রমণে উঠে বক্সে ঢুকে পড়েন মিডফিল্ডার মোনায়েম খান রাজু, গোল মুখের সামনে থাকা আমির উদ্দিন শারিফির উদ্দেশ্যে কাট ব্যাক করলেও বল পাওয়ার আগেই গোল মুখ থেকে ক্লিয়ার করেন বিশ্বনাথ ঘোষ। ৩৫তম মিনিটে পুলিশের মরোক্কান বংশদ্ভুত জার্মান ফরোয়ার্ড আদিল কৌসকৌসের বাকানো শট লাফিয়ে উঠে রুখে দেন গোলরক্ষক আনিসুর রহমান জিকো। প্রথমার্ধে আর বলার মতো তেমন আক্রমন করতে পারেনি কোনো দল। ফলে ১-০ গোলের লিড নিয়েই বিরতিতে যায় বসুন্ধরা কিংস।

বিরতি থেকে ফিরেও বসুন্ধরার সমান তালে খেলে পুলিশ। ৬১তম মিনিটে ডান দিক থেকে ব্রাজিলিয়ান জনাথন ফার্নান্দেজের ক্রস বক্সের জটলা থেকে বসনিয়ান স্টোজেন ভার্নজেস পা ছুয়ালেও গোল মুখ থেকে ক্লিয়ার করেন পুলিশের ব্রাজিলিয়ান ডিফেন্ডার দানিলো কুইপাপা। ৬৬তম মিনিটে বা দিক থেকে ইয়াসিন আরাফাতের কাট ব্যাক স্টোজেন ভার্নজেসের দূর্বল শট সহজেই রুখে দেন পুলিশ গোলরক্ষক মোহাম্মদ নেহাল। ৭১তম মিনিটে বক্সের বাইরে থেকে পুলিশের ফরোয়ার্ড আলামিনের দূরপাল্লার মাটি ঘেষানো শট বা দিকে ঝাপিয়ে রক্ষা করেন আনিসুর রহমান জিকো। ৭৬তম মিনিটে জিকোর কল্যাণে রক্ষা পায় বসুন্ধরা কিংস। বা দিক থেকে আমিরুদ্দিন শারিফির দারুন পাস ধরে বক্সের খানিকটা সামনে থেকে আদিল কুশখুশের বাকানো শট আনিসুর রহমান জিকোর হাতে স্পর্শ করে ক্রস বারে লেগে ফিরে আসে। ৮৮তম মিনিটে ব্যবধান বাড়ানোর সুযোগ পেয়েছিল বসুন্ধরা কিংস। ফাঁকায় থাকা এলিটা কিংসলেকে পাস না দিয়ে নিজেই গোল করার চেষ্টা করে ব্যার্থ হন জোনাথান ফার্নান্দেজ। ম্যাচের একেবারে শেষ দিকে এসে ফ্রি কিকের সময় নিজেদের অবস্থান নিয়ে দুদলের ফুটবলারদের মধ্যে কিছুটা হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। তবে ইব্রাহিম এবং দানিলোকে হলুদ কার্ড দেখিয়ে পরিস্থিতি সামাল দেন রেফারি। শেষ পর্যন্ত আর গোল না ১-০ গোলের জয় নিয়েই মাঠ ছাড়ে বসুন্ধরা কিংস। পাশাপাশি এই জয়ের মাধ্যমে কোয়ার্টার ফাইনালও নিশ্চিত হয় কিংসের।

তবে কোয়ার্টার ফাইনাল নিশ্চিত হলেও কিংস সমর্থকদের দুশ্চিন্তার কারণ দুই ডিফেন্ডার তপু বর্মন এবং তারিক কাজীর ইনজুরি। ইনজুরি নিয়ে ম্যাচের মাত্র ২২ মিনিটেই মাঠ ছাড়েন তারিক কাজি এবং একই কারণে ম্যাচের ৭০তম মিনিটে মাঠ ছাড়েন বসুন্ধরা কিংসের অধিনায়ক তপু বর্মন। এছাড়া ইনজুরির কারনে এখনো মাঠেই নামা হয়নি ইরানিয়ান ডিফেন্ডার খালেদ শাফেঈর। তাইতো কোয়ার্টার ফাইনালে পৌঁছার আনন্দ ছাপিয়ে কিংস ম্যানেজমেন্টকে দুশ্চিন্তায় ফেলছে দলের মূল ফুটবলারদের ইনজুরি সমস্যা।

ইতোমধ্যেই কোয়ার্টার ফাইনাল নিশ্চিত করা বসুন্ধরা কিংসের সাথে ডি গ্রুপের বাকি দলগুলোরও রয়েছে শেষ আটে যাওয়ার সুযোগ। একই গ্রুপের অন্য ম্যাচে এখন করছে চট্টগ্রাম আবাহনী ও বাংলাদেশ নৌবাহিনী।

Previous articleদুইবার এগিয়ে গিয়েও স্বাধীনতার কাছে রহমতগঞ্জের পরাজয়!
Next articleনৌবাহিনীর বিপক্ষে চট্টগ্রাম আবাহনীর কষ্টার্জিত ড্র!

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here