বাংলাদেশের নারী ফুটবল নিয়ে বেশ লম্বা সময় ধরেই একের পর এক কথা হতাশার কথা শোনা যাচ্ছিল। মাঝে নেপাল থেকে সাফ চ্যাম্পিয়নশিপের শিরোপা জিতে দেশে ফেরার পর নতুন করে লাইমলাইটে আসে মেয়েদের ফুটবল। অবশ্য বয়সভিত্তিক পর্যায়ে বরাবরই ভালো করে আসছিল নারীরা। কিন্তু ঘরোয়া ফুটবলে মেয়েদের লিগ বেশ অনিয়মিত হওয়ায় জাতীয় দল খুব একটা সাফল্য পায়নি। তাই মেয়েদের লিগ আয়োজন হয়ে উঠেছিল সময়ের দাবি।

বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন এখনও নারীদের লিগকে একটা শক্ত ভিত্তি দিতে পারেনি। তারপরও শেষ তিনটি লিগে বসুন্ধরা কিংসের অংশগ্রহণ নারীদের লিগকে কিছুটা হলেও আলোর মুখ দেখিয়েছিল। পুরুষ ফুটবলের পাশাপাশি নারীদের লিগে অংশ নিয়ে শিরোপা জয়ের পাশাপাশি জাতীয় দলকে প্রতিনিধিত্ব করা একঝাঁক নারী ফুটবলারকে সম্মানজনক বেতনও দিয়েছিল কিংস। কিন্তু এ বছর আর নারীদের লিগে খেলবে না বসুন্ধরা কিংস! কিন্তু কেন এই সিদ্ধান্ত?

নারী লিগে অংশ না নেওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বসুন্ধরা কিংসের সভাপতি ইমরুল হাসান। গত বৃহস্পতিবার ছিল লিগে অংশ নিতে চাওয়া ক্লাবগুলোর নিবন্ধন করার আবেদনের শেষ দিন। কিন্তু এ দিন ক্লাব লাইসেন্সের জন্য আবেদন করেনি কিংস। যার ফলে এবারের নারী লিগে কিংসের খেলা হচ্ছে না। কিন্তু নারী লিগে অংশ না নেওয়ার কারণ হিসেবে আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু জানায়নি বসুন্ধরা কিংস কর্তৃপক্ষ। তবে বেশ কিছু সূত্রের খবর অনুযায়ী তিনটি কারণে নারীদের লিগ থেকে নিজেদের সরিয়ে নিয়েছে বসুন্ধরা কিংস!

নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা গিয়েছে, মেয়েরা সাফ জেতার পর এবার নাকি আকাশচুম্বী পারিশ্রমিক চেয়েছেন! টাকার অঙ্কে তা ১৫ থেকে ২০ লাখ! গত মৌসুমের তুলনায় যা প্রায় তিনগুণ বেশি। এত টাকায় মেয়েদের সঙ্গে চুক্তি করে একটা প্রতিদ্বন্দ্বিতাহীন লিগ খেলতে চায় না কিংস। কিংসের সরে যাওয়ার আরেকটি বড় কারণ আবাহনী, মোহামেডান, শেখ জামাল, শেখ রাসেলের মতো শীর্ষ ক্লাবগুলোর নারী ফুটবলে অনীহা। কোন চ্যালেঞ্জ ছাড়া হ্যাটট্রিক চ্যাম্পিয়ন হওয়ায় আসলে আগ্রহটাই কমে গেছে বসুন্ধরা কিংসের।

এছাড়া নারী লিগ থেকে বসুন্ধরা কিংসের সরে দাঁড়ানোর আরো একটি বড় কারণ হলো বাফুফের সহ-সভাপতি আতাউর রহমান ভুঁইয়া মানিকের মালিকানাধীন আতাউর রহমান ভুঁইয়া মানিক কলেজ এফসিকে বাফুফের বিশেষ সুবিধা প্রদান। সবশেষ মৌসুমে বাফুফের আবাসিক ক্যাম্পের ফুটবলারদের নিয়ে দল গড়ে রানার্স-আপ হয় ক্লাবটি। তবে বাফুফের বিপক্ষে অভিযোগ আছে, তাদের আবাসিক ক্যাম্প সেই দলটিকে ব্যবহারের সুযোগ দেয় এবং বাফুফের বেতনভূক্ত কোচরাই সেই দল পরিচালনা করেন। কিংস যেটা ভালোভাবে নেয়নি। আর এসব কারণেই এবারের নারী লিগ থেকে নিজেদের সরিয়ে নিয়েছে বসুন্ধরা কিংস।

Previous articleস্বাধীন বাংলা ফুটবল দলের নতুন নামফলক স্থাপন!
Next articleমোহামেডানকে হারিয়ে কিংসের স্বাধীনতা কাপ জয়!

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here