অভাগা যেদিকে যায় সাগর শুকিয়ে যায়। এই ভাবের যেনো তাৎপর্যপূর্ণ উদাহরণ সাইফ স্পোর্টিং ক্লাব। এ যেনো চরম দুর্ভাগ্য। পরপর তিনবার ম্যাচে লিড নিয়েও তীরে এসে তরী ডুবালো জামাল ভূঁইয়ার দল।

ম্যাচ শুরুর মাত্র ৫ মিনিটের মাথা গোল পেয়ে সাইফ স্পোর্টিং ক্লাব। মাঝমাঠের নিচ থেকে সাইফের উজবেক ডিফেন্ডার আশুরোর গাফুরোভ লম্বা থ্রু পাস বাড়ান। মাঠের ডানপ্রান্তে থাকা সাজ্জাদ হোসেন বল পেয়ে আক্রমণে যায়। চট্টগ্রাম আবাহনীর একজনকে পাশ কাটিয়ে বক্সের ভেতরে ঢুকে খানিকটা জায়গা বের করে দুইজনের মাঝখানে দিয়ে বলকে বারে শট করে গোল করেন।

প্রথমার্ধের ইঞ্জুরি টাইমে এসে পেনাল্টি থেকে গোল করে ম্যাচে সমতায় ফেরে চট্টগ্রাম আবাহনী। মাঠের বামপ্রান্ত থেকে চট্টগ্রাম আবাহনীর ডিফেন্ডার সোয়েব মিয়ার ক্রস থেকে বল সাইফ স্পোর্টিং খেলোয়াড় আবিদ হোসেনের হাতে লাগলে রেফারি পেনাল্টি দেন। পেনাল্টি থেকে স্পট কিকে পায়ের হালকা জোর লাগিয়ে গোল করতে সফল হন চট্টগ্রাম আবাহনীর নাইজারের ফরোয়ার্ড পিটার থ্যাংক গড। ফলে ১-১ গোলের সমতা নিয়ে বিরতিতে যায় দুইদল।

দ্বিতীয়ার্ধের ৫৭ মিনিটে সাইফের অধিনায়ক জামাল ভূঁইয়ার থ্রু পাস থেকে বলের নিয়ন্ত্রণ নিতে যায় আশুরোর গাফুরোভ। বক্সের গাফুরোভকে বাধা দিতে গিয়ে ফাউল করে বসেন চট্টগ্রাম আবাহনীর ডিফেন্ডার কেইডেইসা। ফলে পেনাল্টি পেয়ে যায় সাইফ স্পোর্টিং ক্লাব। পেনাল্টি থেকে শট নিয়ে নাইজেরিয়ান ফরোয়ার্ড এমেকার গোল পেতে বেশী বেগ পেতে হয় নি। চট্টগ্রাম আবাহনীর গোলরক্ষক আজাদ হোসেন বলকে লক্ষ্য করে বামদিকে লাফিয়ে পড়লেও দলকে শেষ রক্ষা করতে পারে নি৷

তবে ম্যাচে পুনরায় সমতায় ফিরতে তেমন একটা বেশী সময় নেয় নি চট্টগ্রাম আবাহনী। ৬৭ মিনিটে চট্টগ্রাম আবাহনীর মিডফিল্ডার সোহেল রানার থ্রু পাসে সাইফের অরক্ষিত রক্ষণের সুযোগ নিয়ে স্লাইড করে বলে আলতো টোকা দিয়ে বলকে জালে পাঠান পিটার থ্যাংক গড। সাইফের গোলরক্ষক মিতুল মারমা নিজের জায়গা ছেড়ে দিয়ে বল ধরতে এগিয়ে এলেও শেষপর্যন্ত কাজের কাজ করে উঠতে পারেন নি।

৭৭ মিনিটে মাঠের বামপ্রান্ত দিয়ে এমেকা চট্টগ্রাম আবাহনীর দুইজনকে ফাঁকি দিয়ে বক্সের ভেতরে ঢুকে যান। পরবর্তীতে বক্সের ভেতরে থাকা সতীর্থ এমফো উদোর উদ্দেশ্য বলকে তুলে দিলে বল
চট্টগ্রাম আবাহনীর মিডফিল্ডার কৌশিক বড়ুয়ার হাত লাগলে রেফারি ম্যাচে তার তৃতীয় পেনাল্টির ঘোষণা দেন। পেনাল্টি থেকে আবারো আগের মতো একই জায়গা দিতে শট করে গোল আদায় করে নেন। গোলরক্ষক আগের মতো একই জায়গা দিয়ে লাফিয়ে পড়লে আগের মতোই ব্যর্থ হন।

ম্যাচের শেষ মুহুর্তে এসে পিটার থ্যাংক গড দেখালেন চমক। কেনডেইসার শটকে মিতুল এগিয়ে ঠেকিয়ে দেন। ফিরতি বলে পিটার গোলমুখে শট মিতুলের হাত ফসকে জালে ঢুকে গেলে দলকে তৃতীয়বারের মতো সমতায় ফেরানো পাশাপাশি নিজের হ্যাট্রিক পূরণ করে এই ফরোয়ার্ড। ফলে ৩-৩ গোলে ড্রতে দুইদলই এক পয়েন্ট নিয়ে মাঠ ছাড়ে। এতে করে ৫ ম্যাচে ৯ পয়েন্ট নিয়ে পয়েন্ট টেবিলের চারে আছে চট্টগ্রাম আবাহনী অন্যদিকে সমান ম্যাচ খেলে ৭ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের ছয়ে আছে সাইফ স্পোর্টিং ক্লাব।

অন্যম্যাচে উত্তর বারিধারার বিপক্ষে ২-০ গোলে জয় পেয়েছে বাংলাদেশ পুলিশ ফুটবল ক্লাব। দুই গোলই ম্যাচের দ্বিতীয়ার্ধে হয়েছে। পুলিশের হয়ে ম্যাচে প্রথম গোলটি করেন ফয়সাল আহমেদ শীতল এবং দ্বিতীয় গোলটি করেন আফগান ফরোয়ার্ড জমিরউদ্দীন শারিফি।

জয়ের ফলে ৫ ম্যাচে ৫ পয়েন্ট নিয়ে পয়েন্ট টেবিলের দশম স্থান থেকে অষ্টম স্থানে উঠে এসেছে বাংলাদেশ পুলিশ ফুটবল ক্লাব। বিপরীতে ৫ ম্যাচে ৪ পয়েন্ট পেয়ে এক ধাপ পিছিয়ে পড়েছে উত্তর বারিধারা।

Previous articleএশিয়ান কাপ বাছাইয়ের কঠিন গ্রুপে বাংলাদেশ!
Next articleস্বল্প প্রস্তুতিতে দল নিয়ে মাঠে নামবেন ক্যাবরেরা

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here