এশিয়ান কাপ বাছাইয়ে ভারতের বিপক্ষে ম্যাচের জন্য বাংলাদেশ জাতীয় ফুটবল দলের প্রধান কোচ হ্যাভিয়ের ক্যাবরেরা ৩৮ জনের যে প্রাথমিক দল ঘোষণা করেছেন, তা নিয়ে ফুটবল মহলে শুরু হয়েছে ব্যাপক আলোচনা ও সমালোচনা। লিগ ও কাপে দুর্দান্ত পারফর্ম করা অনেক খেলোয়াড় এই তালিকায় জায়গা পাননি, অথচ কম সময় মাঠে থাকা কিংবা বেঞ্চে বসে থাকা অনেকেই সুযোগ পেয়েছেন।
বসুন্ধরা কিংসের মিডফিল্ডার শেখ মোরসালিন বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের প্রথম পর্বে মাত্র ৭৩ মিনিট খেলেছেন। তিন ম্যাচে বদলি হিসেবে নেমে রহমতগঞ্জের বিপক্ষে ১৩ মিনিট, মোহামেডানের বিপক্ষে ১১ মিনিট এবং চট্টগ্রাম আবাহনীর বিপক্ষে ৪৯ মিনিট মাঠে ছিলেন। এত অল্প সময় মাঠে থেকেও তিনি ক্যাবরেরার ঘোষিত প্রাথমিক স্কোয়াডে জায়গা করে নিয়েছেন। অথচ লিগে ধারাবাহিকভাবে ভালো খেলা অনেক ফুটবলার এই সুযোগ পাননি।
আরেক মিডফিল্ডার চন্দন রায়ও মাত্র ৭৩ মিনিট খেলার সুযোগ পেয়েছেন, কিন্তু প্রাথমিক দলে জায়গা করে নিয়েছেন। বিপরীতে আবাহনীর হয়ে দুর্দান্ত পারফরম্যান্স করা মাহাদী ইউসুফ বা পুলিশ এফসির হয়ে ২ গোল ও ৩ অ্যাসিস্ট করা মানিক মোল্লা দলেই নেই।
বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের প্রথম পর্বে স্থানীয়দের মধ্যে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ গোলদাতা নাবিব নেওয়াজ জীবন। রহমতগঞ্জ এমএফএসের হয়ে লিগ ও ফেডারেশন কাপ মিলিয়ে ৮ গোল করেছেন। তবু ক্যাবরেরার দলে জায়গা হয়নি তার।ক্ষোভে একটি অনলাইন সংবাদমাধ্যমকে তিনি বলেই বসেন,
মৌসুমে যদি ৫০ ম্যাচে ১০০ কিংবা ২০ ম্যাচে ৪০ গোল করি, সিন্ডিকেট কোচ কাবরেরা আমাকে ডাকবে না।
গোলরক্ষক নির্বাচনেও রয়েছে বিস্ময়। বসুন্ধরা কিংসের হয়ে নিয়মিত একাদশে না থাকা আনিসুর রহমান জিকো স্কোয়াডে আছেন, অথচ দারুণ ফর্মে থাকা পুলিশ এফসির গোলরক্ষক রাকিবুল হাসান তুষার উপেক্ষিত হয়েছেন।
এছাড়া, লিগের প্রথম পর্বে দল না পাওয়া নিয়মিত অধিনায়ক জামাল ভূঁইয়া এবারও দলে আছেন। গত কিছু ম্যাচে তাকে বিরতির পরপরই বদলি হিসেবে তুলে নেওয়া হয়েছে, যা তার সাম্প্রতিক পারফরম্যান্স নিয়ে প্রশ্ন তোলে।
এই প্রাথমিক স্কোয়াডকে ঘিরে বাংলাদেশ ফুটবলপ্রেমীদের মধ্যে তৈরি হয়েছে ধোঁয়াশা। পারফরম্যান্সের ভিত্তিতে দল নির্বাচন হচ্ছে কি না, তা নিয়ে নতুন করে প্রশ্ন উঠেছে। ক্যাবরেরার দল নির্বাচনের এই ধরণ জাতীয় দলের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা নিয়ে অনেক সমর্থকের মনে সন্দেহ তৈরি করেছে।