আবার তীরে এসে তরী ডুবলো বাংলাদেশ ফুটবলের। ম্যাচের ৮৮ মিনিটে রেফারির বিতর্কিত এক পেনাল্টির সিদ্ধান্তে ফাইনাল খেলার স্বপ্ন ভঙ্গ হলো জামাল-তপুরে। নেপালের সাথে ১-১ গোলে ড্র করে সাফ চ্যাম্পিয়নশীপ ২০২১ থেকে বিদায় নিলো বাংলাদেশ।

আরো একটবার হতাশা। আরো একটবার স্বপ্নভঙ্গ। শেষ হয়ে গেল দীর্ঘ ১৬ বছর পর বাংলাদেশের সাফ ফাইনাল খেলার স্বপ্ন। উজবেকিস্তানের রেফারির শেষ বাঁশির সঙ্গে সঙ্গে মালে স্টেডিয়াম পরিণত হলো বাংলাদেশের ট্র্যাজেডি হিসেবে। গ্যালারীতে থাকা বাংলাদেশের সমর্থকরাও নিথর। স্বপ্নের ফাইনালটা হাতের মুঠো থেকে ফসকে গেল। ৮৬ মিনিট পর্যন্ত ১-০ গোলে এগিয়ে ছিল বাংলাদেশ দল। ৮৭ মিনিটে উজবেকিস্তানের রেফারির পেনাল্টির এক বাঁশিই বাংলাদেশের স্বপ্ন ভেঙে দিল।

জিতলেই দল পা রাখতো ১৬ বছর পর সাফ চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে। এমন হাতছানি নিয়ে মাঠে নেমেই নেপালের বিপক্ষে এগিয়ে গেল বাংলাদেশ। মালে স্টেডিয়ামে খেলার ৯ মিনিটেই সুমন রেজার গোলে এগিয়ে গিয়েছিল বাংলাদেশ। ম্যাচ শুরুর নবম মিনিটেই পরেই গর্জে উঠল মালে স্টেডিয়াম। বাঁপ্রান্ত থেকে রাকিব বল নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছিলেন, নেপালের ডিফেন্ডার তাকে বাঁধা দিলে পড়ে যান। উজবেকিস্তানের রেফারি ফাউলের বাঁশি বাজান। অধিনায়ক জামাল ভূঁইয়ার ফ্রি কিক থেকে বক্সে মধ্যে থেকে হেড করেন সুমন রেজা। সাথে সাথেই গর্জে ওঠে মালদ্বীপের ন্যাশনাল স্টেডিয়ামের গ্যালারি। ১-০ গোলে এগিয়ে থেকেই বিরতিতে যায় বাংলাদেশ।

দ্বিতীয়ার্ধেও বেশ কয়েকটি গোলের সুযোগ তৈরি করেছিলো অস্কার ব্রুজনের শিষ্যরা। ৫৪ মিনিটে সুমন রেজা একা পেয়ে গিয়েছিলেন নেপালের গোলরক্ষককে। কিন্তু শেষ গোলরক্ষকের সোজাই বল মেরে সুযোগ নষ্ট করেন এই ফরোয়ার্ড। ৬৪ মিনিটে মোহাম্মদ ইব্রাহিমের হেড পোস্টের ওপর দিয়ে চলে যায়। ৭১ মিনিটে সুমন রেজার বাঁ পায়ের দূরপাল্লার মাটি কামড়ানো শট একটুর জন্য জাল পায়নি। ৭৯ মিনিটে ঘটে অঘটন। রাকিবের ব্যাক পাস দখলে নিতে গোলরক্ষক আনিসুর রহমান জিকো বক্স ছেড়ে অনেকটা সামনে চলে আসেন। বল তার হাতে লেগে গেলে সরাসরি লাল কার্ড দেখান রেফারি। এই জিকোই ম্যাচে বেশ কয়েকবার বাঁচিয়েছেন দলকে।

দশজনের দলে পরিণত হওয়া বাংলাদেশ এরপরই খেই হারিয়ে ফেলে। ৮৬ মিনিটে নেপালের অঞ্জন বিসতাকে বক্সের মধ্যে সামান্য পুশ করেন করেন সাদউদ্দিন। এছাড়া পাশেই থাকা বিশ্বনাথ ঘোষের হাতও লাগে অঞ্জনের গায়ে। তখনই পেনাল্টির বাঁশি বাজান রেফারি। তবে সাদের এই পুশ বা বিশ্বনাথে ঐ হাত লাগানোটা কতোটা পেনাল্টির বাঁশি বাজানোর মতো যৌক্তিক ছিলো সেটা রেফারিই ভালো বলতে পারেন। পেনাল্টি স্পট থেকে ডান পায়ের শটে সেই অঞ্জনই পরাস্ত করেন বদলি গোলরক্ষক আশরাফুল ইসলাম রানাকে। ১-১ সমতায় শেষ হয় ম্যাচ।

ম্যাচে বল দখলের লড়াইয়ে পিছিয়ে থাকলেও বেশ কয়েকটি উল্লেখযোগ্য শট নিয়েছে বাংলাদেশ। ৬ শটের মধ্যে ৪টিই ছিল লক্ষ্যে। অন্যদিকে নেপাল ৯ শট নিলেও লক্ষ্যে রাখতে পেরেছিল মাত্র তিনটি। এই জয়ে ৪ ম্যাচে ২ জয় আর ১ ড্রতে ৭ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে নেপাল। ৪ ম্যাচে এক জয়, ২ ড্রয়ে ৪ পয়েন্ট নিয়ে চার নম্বরে থেকে শেষ করেছে বাংলাদেশ। অথচ এই একটি ম্যাচ জিততে পারলে বাংলাদেশেরও সুযোগ ছিল গ্রুপের শীর্ষে থেকে ফাইনাল নিশ্চিত করার।

Previous articleরাইভাল ওয়াচ; বাংলাদেশ বনাম নেপাল
Next articleপেনাল্টিটি সম্পূর্ণ ভুল সিদ্ধান্ত বললেন অস্কার!

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here