ইতিমধ্যে বাংলাদেশ জাতীয় দলের সকল ম্যাচগুলোর পরিসংখ্যান সংগ্রহের কাজ শুরু করেছে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন। কিন্তু এই কাজটা শুরু করতে অনেক দেরী করে ফেলেছে তারা। যার কারণে এখনও সাবেক খেলোয়াড়দের অর্জনগুলো নিয়ে ধোঁয়াশা রয়েছে। কোন সমর্থকও জোড় গলায় বলতে পারে না কে বাংলাদেশের হয়ে সর্বোচ্চ গোলদাতা।

বিষয়টি আক্ষেপের কারণ হয়েছে বাংলাদেশ জাতীয় দলের সাবেক স্ট্রাইকার ‘গোল মেশিন’ খ্যাত শেখ মোহাম্মদ আসলামের। নিজের এক ফেসবুক স্ট্যাটাসে এই কষ্টের কথা তুলে ধরেন। তাঁর কাছে খুবই কষ্টদায়ক মনেহয় যখন ভাবেন জীবনের গুরুত্বপূর্ণ সময়ে বাংলাদেশের জন্য নিজের কলিজা উজার করে খেলেছে, মাথার ঘাম পায়ে ফেলে যা অর্জন করেছেন তা আজও চিৎকার করে সাক্ষাৎকারগুলোতে বলতে হয় তিনি কি কি করেছিলেন। এগুলো বলতে হওয়ায় নিজের অর্জনগুলো তাঁর কাছে এখন নগন্য মনেহয়।

সাংবাদিক নাজুল আমিন কিরনের তালিকায় আসলামের গোল সংখ্যা

তিনি ধন্যবাদ জানান প্রবীন সাংবাদিক নাজমুল আমিন কিরণকে, কারণ তিনি নিজের অভিজ্ঞতা ও সংগ্রহের সাহায্যে আসলামের সম্মানটা ধরে রেখেছেন। স্ট্যাটাসের শেষ দিকে আসলাম জানান তার কাছে সর্বোচ্চ গোলদাতা হয়ে থাকাটা সম্মানের কিন্তু আনন্দের নয়। কারণ, এতে তিনি বুঝতে পারছেন দেশের ফুটবল থমকে আছে। তিনি চান নতুন প্রজন্ম তার এই রেকর্ড ভেঙ্গে দিক এবং জীবনদ্দশায় তিনি ঐ ফুটবলারকে ফুলের শুভেচ্ছা জানিয়ে বুকে জড়িয়ে ধরবেন।

নিচে শেখ মোহাম্মদ আসলামের ফেসবুক স্ট্যাটাসটি তুলে ধরা হলো –

আজ ভীষন আক্ষেপ হয় যখন দেখি আমার করা রেকর্ড প্রমানের জন্য একজন সিনিয়র সাংবাদিকের শরনাপন্ন হতে হয় যেখানে আমাদের দেশে ফুটবল ফেডারেশন রয়েছে যাদের কাজের মধ্যে নথি সংগ্রহ, রেকর্ড আপডেট করাও অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ কাজ। খুবই কষ্টদায়ক মনে হয় যখন ভাবি জীবনের এত গুরুত্বপূর্ণ সময় এই দেশের জন্য কলিজা উজার করে এত কস্ট করে খেলেছি মাথার ঘাম পায়ে ফেলে সেখানে আজকে আমাকে বিভিন্ন ইন্টারভিউতে চিৎকার করে জানানো লাগছে যে আমি এটা করেছিলাম, আমি সেটা করেছিলাম! নিজের কথা নিজে এভাবে বলতে গিয়ে নিজের অর্জনগুলোকে খুব নগন্য মনে হয় তাও বলেছি কারন অন্যায় এর সাথে আমি কখনো আপস করতে শিখিনি। আমাকে যারা চেনে তারা ভালো করেই জানে সত্যি কথা বলা এবং সৎ জীবনযাপন করা আমার সারাজীবনের একটি কঠিন শপৎ!

ধন্যবাদ জানাই কিরন ভাইকে উনি উনার অভিজ্ঞতার প্রেক্ষিতে, আল্লাহর মেহেরবানীতে আমার সম্মানটা ধরে রেখেছেন।

পরিশেষে শুধু এটুকু বলবো, সময় আছে আপনারা গুনীর কদর বুঝুন। যার যেটুকু এপ্রিসিয়েশন প্রাপ্য তাকে তা দিলে কেউ ছোট হয়ে যায় না কখনো। এমন মন মানসিকতা রাখলে এদেশে আরেকজন আসলাম আসার আগেই ঝড়ে যাবে!

আমি মনে করি এত বছর ধরে সর্বোচ্চ গোলদাতা হয়ে থাকাটা আমার কাছে খুবই সম্মানের হলেও একদম আনন্দের নয়। বরং এতে প্রমান হয় ফুটবল থমকে আছে! দোআ করি আমার এই রেকর্ড নতুন প্রজন্ম খুব তাড়াতাড়ি ভেংগে ফেলবে এবং আমি জীবদ্দশায় তাকে ফুলেল শুভেচ্চা জানিয়ে বুকে জড়িয়ে নেবো ইন শা আল্লাহ!

সুস্থ হোক ফুটবল, বদলে যাক আমাদের মানসিকতা।

Previous articleক্লাবদের স্বাগতিক হওয়ায়র আমন্ত্রণ জানিয়েছে এএফসি
Next articleঅবশেষে টাকা পাচ্ছে তেরেঙ্গানু!

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here