শেষ পর্যন্ত স্বস্তির জয় নিয়ে ফিফা বিশ্বকাপ বাছাইয়ের দ্বিতীয় রাউন্ডে কোয়ালিফাই করলো বাংলাদেশ। বাজে রেফারিংয়ের স্বীকার হলেও ঘরের মাঠে জয় পেতে বিন্দুমাত্র ভুল করে নি লাল-সবুজের প্রতিনিধিরা। বিশ্বকাপ বাছাইপয়ের প্রথম রাউন্ডের সেকেন্ড লেগে মালদ্বীপকে তারা ২-১ হারিয়ে দুই লেগ মিলিয়ে ৩-২ গোলের জয় পায়।

১১ মিনিটে ম্যাচে এগিয়ে যায় বাংলাদেশ। দ্রুত গতির থ্রু পাস থেকে ফয়সাল আহমেদ ফাহিমের কাটব্যাকে বল মালদ্বীপের জালে পাঠিয়ে দেন বাংলাদেশ দলের নম্বর টেন রাকিব হোসেন। ১৫ মিনিটে আবারো গোলের সুযোগ পেয়েছিলো বাংলাদেশ। জামাল ভূঁইয়ার ক্রস থেকে ফয়সাল আহমেদ ফাহিম মালদ্বীপের ডিফেন্ডারের বাঁধন ছেড়ে বেরিয়ে বলি করলেও বল ক্লিয়ার করে দেন গোলরক্ষক হোসেইন শারিফ।

২৯ মিনিটে মালদ্বীপের গোলরক্ষককে একা পেয়েও গোলের সুযোগ হাতছাড়া করেন রাকিব। হৃদয়ের লম্বা করে বাড়ানো থ্রু পাস বল পেয়ে বলে ফাস্ট টাচ করেন রাকিব তবে মালদ্বীপের গোলরক্ষক নিজের জায়গা থেকে বেরিয়ে এসে দলকে বাঁচিয়ে দেন। ৩৫ মিনিটে জামালের ক্রস থেকে বল পেয়ে রাকিব বলকে অন টার্গেট চেষ্টা করলেও বল গোলপোস্টে লেগে সীমানা অতিক্রম করায় লিড নিতে আবারো ব্যর্থ হয় বাংলাদেশ দল।

৩৭ তম মিনিটে ম্যাচে সমতা ফিরে পায় বাংলাদেশ হামজা মোহাম্মদের কর্ণার কিকে বাংলাদেশ দলের ডিফেন্ডার ব্যাক হেডারে বল ক্লিয়ার করতে না পারায় রিবাউন্ডে হেড করে মালদ্বীপের মিডফিল্ডার ইব্রাহিম আইসাম এবং তাতেই কিস্তিমাত করে ইব্রাহিম। এতে করে তার দল মালদ্বীপ ম্যাচে ফিরে আসে। পরে আর গোল না হলে ১-১ গোলে শেষ হয় প্রথমার্ধের খেলা।

দ্বিতীয়ার্ধের শুরু আবারো গোল করে বাংলাদেশ। মাঠের বামদিকে উঠে সাদউদ্দিন ক্রস করলে বল ফিরিয়ে দেন মালদ্বীপ গোলরক্ষক হোসেইন শারিফ।  বল ফিরিয়ে দিলেও রিবাউন্ডে বক্সের ভেতরে বল পেয়ে যায় ফয়সাল আহমেদ ফাহিম এবং সেখান থেকে গোলকে জাল জড়াতে বিন্দুমাত্র দেরী করেন নি ফাহিম। ফলে ম্যাচের ফলাফল দাঁড়ায় ২-১ এ।

৬০ মিনিটে মোহাম্মদ সোহেল রানা দ্বিতীয়বারের মতো হলুদ দেখায় দশজনের দল হয়ে যায় বাংলাদেশ। মালদ্বীপের খেলোয়াড়কে পিছন দিক থেকে স্লাইড করে পিওর ট্যাকেল করলেও রেফারির ভুল সিদ্ধান্তে সোহেলকে লাল কার্ড হজম করতে হয়। ৭২ থেকে ৭৩ মিনিটের মধ্যে টানা তিনবার বাংলাদেশের রক্ষণে হামলে পড়ে মালদ্বীপ। কিন্তু তিনবারই বাংলাদেশকে বাঁচিয়ে দেন মিতুল মারমা। ৭৭ মিনিটে সতীর্থে পাস থেকে বল ইব্রাহিম মাউদি। বলকে গোলরক্ষক মিতুল মাথার উপর তুলে দিলেও দিকনির্দেশনাহীন বল জাল খুঁজে পায় না।

দ্বিতীয়ার্ধের যোগ করা সময়ে মালদ্বীপও দশজনের দলে পরিণত হয়। মালদ্বীপের আহনাফ রশিদ মজিবুর রহমান জনি বক্সের সামনে ফাউল করলে লাল কার্ড দেখায় রেফারী। পরবর্তীতে আর কোনো গোল না হলে ২-১ জয় পায় বাংলাদেশ।

আজকের ম্যাচে বেশ কয়েকবার রেফারীর বাজে সিদ্ধান্তের মুখে পড়ে বাংলাদেশ। সোহেল রানার পিওর ট্যাকেল কার্ড দেখলেও মালদ্বীপে খেলোয়াড় যখন হাই ফুটেড শটে রাকিব হোসেনে বুকে আঘাত করে তখন রেফারি ছিলেন নির্বিকার। পরবর্তীতে ফাউলের স্বীকার হয়ে বাংলাদেশের খেলোয়াড় মাটিতে পড়ে থাকলেও রেফারী খেলা চালিয়ে যান। বাংলাদেশ দলের কোচ তাকে এই বিষয়ে অবগত করলেও তিনি তাতে কোনো কর্ণপাত করেন নি। তবে এতসব কিছুর পরও জয় পায় বাংলাদেশ। এই জয়ে দ্বিতীয় রাউন্ডে কোয়ালিফাই করে বাংলাদেশ দল। দ্বিতীয় রাউন্ডে বাংলাদেশের প্রতিপক্ষ অস্ট্রেলিয়া, লেবানন এবং ফিলিস্তিন।

Previous articleম্যাচ প্রিভিউ : বাংলাদেশ বনাম মালদ্বীপ
Next articleকেন কেড়ে নেয়া হলো ফিলিস্তিনের পতাকা?

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here