ঢাকা ডার্বি! দেশের মানুষের জন্য একসময় এই একটি ম্যাচ ছিলো দুইভাগে বিভক্ত হয়ে যাওয়ার এক উপলক্ষ্য। ঢাকা আবাহনী ও ঢাকা মোহামেডানের ম্যাচকে ঘিরে উত্তেজনা মাঠ ছাড়িয়ে গ্যালারিতে, গ্যালারি ছাড়িয়ে পুরো দেশেই ছিলো। কিন্তু আজ তা হারিয়েই বসেছে। এমনকি বর্তমানের ফুটবল প্রেমী তরুণরা হয়তো বলতেই পারবে না ডার্বি কবে! তবে ঐতিহ্যের লড়াইয়ে ফেডারেশন কাপ ২০২০ এর গ্রুপ পর্বের ম্যাচে আজ আবারও মাঠে নামবে দুই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী দল। বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামে ম্যাচটি শুরু হবে সন্ধ্যা ৭.১৫ মিনিটে।

ফেডারেশন কাপের শিরোপা ১১ বার ঘরে তুলেছে ঢাকা আবাহনী। পক্ষান্তরে ১০ বার ট্রফি উঁচিয়ে ধরেছিলো সাদা-কালোরা। কিন্তু ক্লাব দুটোর বর্তমান অবস্থা বিবেচনা করলে অনেক বেশি এগিয়ে আবাহনী। শেষবার মোহামেডান ফেডারেশন কাপ জিতে ২০০৯ সালে, সেখানে ২০১৮ সালেও শিরোপা নিজেদের করেছিলো আকাশী-নীলরা। সর্বশেষ পরিত্যক্ত মৌসুমে আবাহনী ৪-০ গোলের বড় জয় পায় মোহামেডানের বিরুদ্ধে। এর আগের মৌসুমে প্রথম লেগে আবাহনী ৩-০ গোলে জিতলেও ফিরতে লেগে মোহামেডান ৪-০ গোলে জিতে নতুনভাবে ফিরে আসার ডাক দেয়।

এখন পর্যন্ত ঢাকা ডার্বিতে ম্যাচ হয়েছে ১২৮ টি। মোহামেডান ম্যাচ জিতেছে ৪১, পক্ষান্তরে ঢাকা আবাহনীর জয় ৫৩ ম্যাচে। ড্র হয়েছে ৩১ টি খেলা ও পরিত্যক্ত ৩ ম্যাচ! ফেডারেশন কাপে ঢাকার দুই জায়ান্ট মুখোমুখি হয়েছে ১৯ বার! এখানে পরিসংখ্যানে এগিয়ে মোহামেডান। তাদের জয় ৮ টি। আবাহনীর জিতেছে ৭ টি ম্যাচ। ড্র ৩ টি ও পরিত্যক্ত হয়েছে ১ টি খেলা।

আজকের ম্যাচকে ঘিরে আবাহনীর প্রত্যাশা ব্রাজিলিয়ান স্ট্রাইকার তোরেসের দিকে। সর্বশেষ ইন্দোনেশিয়ার লীগে খেলা এই খেলোয়াড় গোল করতে পারদর্শী। ঠিক একই ভাবে মোহামেডানের ভরসা পরীক্ষিত সৈনিক সুলেমানে ডিয়াবাটের দিকে। গত মৌসুমের দল থেকে প্রায় ১৮-১৯ জন খেলোয়াড় ছেটে চ্যাম্পিয়নশীপ ও বিশ্ববিদ্যালয় দল থেকে তরুণদের নিয়ে এক নতুন দল গড়েছে মোহামেডান কোচ শন লেইন। তাই তার দলকে দিতে হবে বড় পরীক্ষা। অন্যদিকে জাতীয় দলে খেলা খেলোয়াড়দের নিয়ে অভিজ্ঞ দল আবাহনী জয় ব্যতিত কিছু ভাবছে না এমনটা পরিস্কার করেছেন তাদের কোচ মারিও লেমস।

ম্যাচটি প্রতিযোগীতামূলক হবে বলেই মনে করেন আবাহনীর অধিনায়ক নাবিব নেওয়াজ জীবন, ‘আবাহনী-মোহামেডান মানেই ফাইটিং ম্যাচ। এখানপ কে দূর্বল, কে শক্তিশালী তা দেখার সুযোগ নেই। মোহামেডান অবশ্যই আমাদের জন্য শক্তিশালী প্রতিপক্ষ।’ অন্যদিকে আত্মবিশ্বাস রেখে তরুণ খেলোয়াড়দের প্রতিভার উপর ভর করেই আশাবাদী মোহামেডান অধিনায়ক উরু নাগাতা, ‘আবাহনী বড় ক্লাব, বড় খেলোয়াড় আছে। তবে আমরা আত্মবিশ্বাসী। যদি আপনার আত্মবিশ্বাস থাকে, তবে কোন সমস্যাই হবে না। আমাদের সকল তরুণ খেলোয়াড়রা প্রতিভাবান।’

দেশের ফুটবল প্রেমীদের আগ্রহের কেন্দ্রে হয়তো ঢাকা ডার্বি আর নেই। কিন্তু ঐতিহ্যের এই লড়াই যে এগিয়ে যাওয়ার। অপেক্ষাটা এখন ম্যাচ মাঠে গড়ানোর। জিতবে কে? ধানমন্ডির দল নাকি মতিঝিলের দল?

Previous articleজয় দিয়ে শুরু আরামবাগের!
Next articleআজ ভারত যাচ্ছেন জামাল

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here