আজ থেকে প্রায় দুই দশক আগের কথা, দক্ষিণ এশিয়ার ফুটবলে বিশ্বকাপ হিসেবে খ্যাত সাফ চ্যাম্পিয়নশীপের মুকুট পেয়েছিলো বাংলাদেশ। ঘরের মাঠে সেবার দক্ষিণ এশিয়ার সেরা বনে গিয়েছিলো লাল-সবুজের প্রতিনিধিরা। বাংলাদেশকে সেরা বানানোর ক্ষেত্রে পেছনের কারিগর ছিলেন তৎকালীন বাংলাদেশ দলের অস্ট্রিয়ান কোচ জর্জ কোটান।

দায়িত্ব ছাড়লেও এতোবছর পরও কোটানকে মনে রেখেছে বাংলাদেশের ফুটবল ভক্তরা। তবে কোটান যেনো এখন তার শিষ্য ও ভক্তদের কাছে শুধুই একটি স্মৃতি। আজ ২৮ শে সেপ্টেম্বর ইহলোকের মায়া ত্যাগ করে পরলোকে পাড়ি জমালেন বাংলাদেশ ফুটবলের এই কিংবদন্তি কোচ

টানের জন্মটা হয়েছিলো ১৯৪৬ সালে। বাবা-মা হাঙ্গেরিয়ান-অস্ট্রিয়ান হলেও কোটান বেড়ে উঠেছেন অস্ট্রিয়াতে। ফুটবল কোচিংয়ের দীক্ষাটা তিনি পেয়েছিলেন নেদারল্যান্ডসের কিংবদন্তি কোচ রাইনাস মিশেলের কাছে।

কোটানের সাথে বাংলাদেশের সম্পর্কের শুরুটা হয় ২০০০ সালে। সেই বছরই লাল-সবুজের ড্রাগআউটে দাঁড়ান কোটান। এর তিনবছর পর ২০০৩ সালে বাংলাদেশকে সাফের ট্রফি এনে দেন। বাংলাদেশকে সাফল্যে মুড়ে দিয়ে সেই বছরই বাংলাদেশের কোচের দায়িত্ব ছাড়েন তিনি। যোগ দেন বাংলাদেশের ঘরোয়া ফুটবলের ক্লাব মুক্তিযোদ্ধা সংসদের কোচ হিসেবে। মুক্তিযোদ্ধার হয়েও তার সাফল্য রয়েছে। মুক্তিযোদ্ধাকে তিনি ফেডারেশন কাপ জেতান।

২০০৯-১০ মৌসুমে আবারো কোনো জাতীয় দলের কোচের দায়িত্ব নেন এই অস্ট্রিয়ান। তবে সেবার দায়িত্ব নেন পাকিস্তান জাতীয় ফুটবল দলের। পাকিস্তানের পাট চুকিয়ে আবারো বাংলাদেশের মাটিতে তিনি পা রেখেছিলেন। ফিরে এসে আবাহনীর দায়িত্ব পেয়েছিলেন কোটান। ২০১৫-২০১৬ সাল পর্যন্ত আবাহনীর কোচ হিসেবে দায়িত্বে ছিলেন তিনি। ২০১৬ সালে তিনি আবাহনীর কোচের দায়িত্বে থাকা অবস্থায় আবাহনীকে লীগ শিরোপা এবং ফেডারেশন কাপের ট্রফি জেতান।

বাংলাদেশের জন্য তার এক প্রকার আত্মিক টান ছিলো। নিজের বাড়ির আঙ্গিনায় লাল-সবুজের পতাকাও টাঙ্গিয়েছিলেন এই ভিনদেশী। বাংলাদেশের ফুটবলের প্রয়োজনে ডাক দিলে সাড়া দিতেন কোটান,বারবার ছুটে আসতেন ছাপ্পান্ন হাজার বর্গমাইলের এই দেশে। কিন্তু এবার আর ফেরা হবে না তার। চাইলেও কেউ আর তাকে ফেরাতে পারবে না। কারণ তার আজ চূড়ান্ত প্রস্থান ঘটেছে, শুধুমাত্র ফুটবল থেকে নয় পুরো পৃথিবী থেকে।

Previous articleনেপালের বিপক্ষে ড্র করে এশিয়ান গেমস শেষ করলো নারী দল!
Next articleবিশ্বকাপ বাছাইয়ের জন্য জামালদের ক্যাম্প শুরু ৩০ সেপ্টেম্বর!

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here