ঘরের মাঠে দ্বিতীয় ফিফা আন্তর্জাতিক প্রীতি ম্যাচে গোল উৎসব করেছে বাংলাদেশ নারী ফুটবল দল। সিঙ্গাপুরের জালে গুনে গুনে ৮ বার বল পাঠিয়েছে তহুরা-ঋতুপর্ণারা! নারীদের ফিফা র‌্যাঙ্কিংয়ের পাশাপাশি অতীত পরিসংখ্যানেও এগিয়ে ছিল সিঙ্গাপুর। কিন্তু প্রথম প্রীতি ম্যাচে তাদেরই বিপক্ষে ৩-০ গোলের জয়ে দূর হয় সংশয়। যোগ হয় আত্মবিশ্বাস। আর সে আত্মবিশ্বাস কাজে লাগিয়ে এবার আরো বড় জয় তুলে নিয়েছে লাল সবুজের প্রতিনিধিরা। প্রথম ম্যাচের মত জয়ের আশা থাকলেও এত বড় জয় আসবে, সেটা নাকি ভাবনায়ই ছিল না বাংলাদেশ কোচ সাইফুল বারী টিটুর! তাইতো ম্যাচ পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে তার কণ্ঠে শোনা গেল বিস্ময়মাখা শব্দ ‘ওয়াও’

কমলাপুরের বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ সিপাহী মোস্তফা কামাল স্টেডিয়ামে আজ দ্বিতীয় প্রীতি ম্যাচে র‌্যাঙ্কিংয়ে ১২ ধাপ এগিয়ে থাকা সিঙ্গাপুরকে ৮ গোলে বিধ্বস্ত করে বাংলাদেশ। ম্যাচ শেষে সংবাদ সম্মেলনে এমন দাপুটে পারফরম্যান্সের সব কৃতিত্ব সাবিনা-মারিয়াদের দেন বাংলাদেশ কোচ। টিটু বলেন,

“আমি নিজেও খেলোয়াড় ছিলাম, প্রথম ম্যাচ হয়ত আমাদের জন্য কঠিন ছিল না, স্বাচ্ছন্দ্যেই জিতেছিলাম, কিন্তু এবার এত বড় ব্যবধানে জিতব, ভাবিনি। প্রথম জয়ের পর আবারও সবটুকু নিংড়ে দেওয়া, এই কৃতিত্ব পুরোপুরি মেয়েদের। ভিন্ন মাত্রার মানসিকতা এই মেয়েদের।”

এরসঙ্গে টিটু আরো যোগ করেন,

“আমার ধারণা, সাফের পর পুরো দেশের মানুষই ওদের হৃদয়ে ধারণ করে নিয়েছে। ওটার ধারাবাহিকতায় থাকাটাই ছিল গুরুত্বপূর্ণ এবং আমরা কঠিন যে ম্যাচ খেলেছি (এশিয়ান গেমসে), বিশেষ করে জাপানের বিপক্ষে, আমার মনে হয় ওই ম্যাচটি মানসিকভাবে মেয়েদের আরও শক্ত করেছে, অভিজ্ঞ করেছে। এখানে আমার বিন্দুমাত্র অবদান নেই, পুরোটাই মেয়েদের। আমিও তো অবাক হয়েছি, স্কোরলাইন ৮-০! ওয়াও।”

কোচের সঙ্গে অধিনায়ক সাবিনা খাতুনও পুরো দলকে সব কৃতিত্ব দিয়েছেন। এর পাশাপাশি নিজের পারফরম্যান্স নিয়ে অসন্তুষ্টির কথাও জানান বাংলাদেশ অধিনায়ক। সাবিনা খাতুন বলেন,

“নেপালের বিপক্ষে আমরা যে দুইটা প্রীতি ম্যাচ খেলেছিলাম, তখনও বলেছিলাম, মেয়েদের ফিটনেসে বড় একটা ঘাটতি ছিল। তবে গত তিন-চার মাস যে অনুশীলন করেছে, একসাথে আছে, সেটারই ধারাবাহিকতা মাঠে মেলে ধরেছে। আসলে আমার গোলটা দর্শনীয় গোল হয়নি, যেসব গোল মিস করেছি, আমি মনে করি, আমার ক্যারিয়ারে সবচেয়ে বাজে মিসগুলো আজকে হয়েছে। তারপরও মেয়েরা ভালো খেলেছে, সবার প্রচেষ্টা ছিল, আমার মনে হয় মেয়েরা দুইশ ভাগ দিয়ে খেলেছে।”

ম্যাচ পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে কোচ ও অধিনায়কের সঙ্গে এসেছিলেন জোড়া গোল করা ঋতুপর্ণা চাকমাও। আজকের ম্যাচকে তার ক্যারিয়ারের স্মরণীয় হিসেবে উল্লেখ করে তিনি বলেন,

‘‘জাতীয় দলের হয়ে এর আগেও গোল করেছি। তবে কখনো দুই গোল ছিল না। আজ জোড়া গোল করেছি এবং দল ম্যাচ জিতেছে। এটি আমার ক্যারিয়ারের অন্যতম স্মরণীয় ম্যাচ।’’

Previous articleজয় দিয়েই বছর শেষ করলো বাংলাদেশ
Next articleচ. আবাহনীকে হারিয়ে শেষ চারে মোহামেডান

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here